নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: চন্দ্র পুলি থেকে দুধ পুলি। পাটি সাপটা থেকে শামুল পিঠে। জামাই পিঠে থেকে লবঙ্গ পিঠে। আরও হরেক রকমের জিভে জল আনা লোভনীয় পিঠের সম্ভার নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর শিল্পকলা আকাদেমিতে শুরু হল জাতীয় পিঠে উৎসব। আর উদ্বোধনের পরেই জমজমাট পিঠে মেলা। কার্যত ভোজন রসিক হিসেবে পরিচিত বাঙালি নানা পিঠের স্বাদ নিতে হামলে পড়েছেন। সাধারণ মানুষ যাতে শীতের মরসুমে পিঠের স্বাদ চাখতে পারেন তার জন্য দামও রাখা হয়েছে সাধ্যের মধ্যে। ১০ টাকার বিনিময়ে মিলছে লোভনীয় পিঠে।
শীত মানেই বাঙালির কাছে নবান্ন, আর পিঠে-পুলির উৎসব। যদিও আজকের ঘড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পৌঁছনোর দুনিয়ায় পিঠে-পুলি বানানোর সময় নেই অনেক গৃহিনীর। সকাল থেকে শুরু হয় দৌড়। দিনভর চলে এক লড়াই। ফলে শহরের তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই পিঠে-পুলির আস্বাদন থেকে বঞ্চিত। বাঙালির পিঠে সংস্কৃতি যাতে হারিয়ে না যায় তার জন্য গত কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিসিষ্ট টিভি ব্যক্তিত্ব তথা জাতীয় পিঠে উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি ম হামিদ। তাঁর কথায়, ‘পিঠে-পুলি বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। গ্রামবাংলার পিঠে-পুলির স্বাদ তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
দেশে গত কয়েকদিন ধরেই দাঁত কাঁপানো ঠাণ্ডা পড়েছে। আর সেই ঠাণ্ডার মধ্যে শিল্পকলা আকাদেমি প্রাঙ্গনে শুরু হয়েছে জাতীয় পিঠে উৎসব। মেলা চলবে দশদিন ধরে। মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, নড়্ইাল, নরসিংদী, বরিশাল, নোয়াখালী, ভোলা, জামালপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পিঠেশিল্পীরা দুই শতাধিক রকমের পিঠে নিয়ে হাজির। তার মধ্যে রয়েছে ভাপা পিঠে, চিতই পিঠে, কলা পিঠে, তেজপাতা পিঠে, দুধ চিতই, ছাঁচ পিঠে, সূর্যমুখী পিঠে, নকশি পিঠে, দুধরাজ, ফুলঝুরি সহ রকমারি স্বাদের পিঠে। চোখের সামনে হরেকরকমের পিঠে তৈরি দেখে যেমন শহরবাসীর চোখ ছানাবড়া, তেমনই ধোঁয়া ওঠা পিঠে চেখে দেখার জন্য হুড়োহুড়িও পরে গিয়েছে।