নিজস্ব প্রতিনিধি: অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরানো অবস্থা ছিল। সেই অবস্থায় আর্থিক কষ্ট সঙ্গে করেও পড়াশোনার খরচ জুগিয়েছেন ছেলের। সেই ছেলে ডাব্লুবিসিএস (WBCS) উত্তীর্ণ হয়ে এবার হতে চলেছে বিডিও (BDO)।
মালদহের (Malda) হরিশ্চন্দ্রপুর-২ (Harishchandrapur-2) নম্বর ব্লকের দৌলতপুর পঞ্চায়েতের হরদমনগর গ্রামের বাসিন্দা জ্ঞানবান দাস (Gyanban Das)। পেশায় শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে, এক মেয়েকে নিয়ে সংসার। শ্রমিকের কাজ করে ৫ জনের সংসার চালানো কষ্টকর ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও ছোট ছেলে কেশব দাসের পড়াশোনার খরচ জোগাতেন কখনও ঋণ নিয়ে, কখনও স্ত্রীর কানের দুল বিক্রি করে। সেই কেশব দাস (Keshab Das) ডাব্লুবিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এবার অভাবের সংসারে একটুকরো আলোর দিশা দেখিয়েছেন। অভাবকে সঙ্গী করে বড় হওয়া কেশব এবার হবেন বিডিও। যা ভেবে আনন্দাশ্রু গড়িয়ে নামছে তাঁর মায়ের চোখ দিয়ে। খুশিতে গলা ধরে আসছে বাবা জ্ঞানবান দাসের।
জ্ঞানদাস জানান, ছোট থেকেই মেধাবী ও কঠোর পরিশ্রমী কেশব। ২০১৬ সালে মালদহ কলেজ থেকে সংস্কৃত বিষয়ে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে স্নাতক হন তিনি। এরপর ২০১৮ সালে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন। পাশাপাশি মালদহে হোস্টেলে থেকে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যও নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন। নিজে টিউশন পড়িয়ে পড়াশোনার কিছুটা খরচ জোগাড় করতেন। ছোট থেকে কেশবের স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হওয়ার, কিন্তু বিসিএস পরীক্ষায় বসেন সেই প্রস্তুতির মাঝে। ২০২০ সালে ডাব্লুবিসিএস পরীক্ষায় বসে ছিলেন তিনি। গত ২ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর দেখা যায় কেশব এক্সিকিউটিভ – ‘এ’ বিভাগে ২৭ ব়্যাঙ্ক করেছেন। তাঁর এমন সাফল্যে খুশি আত্মীয় প্রতিবেশীরাও। এলাকার পড়ুয়াদের কাছে আদর্শ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছেন কেশব দাস।