নিজস্ব প্রতিনিধিঃ হাই হিল , এককথায় ফ্যাশনমনস্ক নারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। যেকোনো অনুষ্ঠান বা বাইরে বের হলে হাই হিল জুতো এক আলাদা কমফোর্ট দেয়। ভিক্টোরীয়-উত্তর যুগে হাই হিলের জনপ্রিয়তা বিশেষভাবে বেড়ে যায়। একসময় আভিজাত্য এবং নারীত্বের সমার্থক হয়ে ওঠে এই হাই হিল । তবে আপনি কি জানেন বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা কমছে। হাই হিলের বিক্রি কমেছে। দেড়শো বছর ধরে দাপিয়ে চলা পছন্দে ভাঁটা পড়েছে।
‘দ্য সাইকোলজি অব ফ্যাশন’ বইয়ের লেখক ড. ক্যারোলিন মেয়ার এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ‘হাই হিল শরীরের অঙ্গভঙ্গি বদলে দেয়। এই জুতা পরলে আপনাকে বিশেষ একটা পদ্ধতিতেই হাঁটতে হবে। আর সেটা আশপাশের মানুষদের থেকে আপনাকে আলাদা করে ফেলবে, আপনি হয়ে উঠবেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। এটা গ্ল্যামার, আত্মবিশ্বাস আর পেশাদার মনোভাবের জন্ম দেয়।’
হাই হিল ব্যবহারের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে বহু গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে তা সত্ত্বেও বিক্রিতে ভাঁটা পড়েনি। তবে করোনা মহামারি সমস্ত পরিস্থতির বদল ঘটিয়েছে। এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজার গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এনপিডি গ্রুপের হিসাবে ২০২০ সালের শেষের দিকে হাই হিল কেনার হার কমেছে ৬৫ শতাংশ।
ক্যারোলিন মেয়ার এই বিষয়ে জানিয়েছেন, মহামারিকালের পর মানুষের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে নিজের স্বাস্থ্য আর স্বাচ্ছন্দ্য, যে দুটোর কোনোটার সঙ্গেই হাই হিলের যোগ নেই। তা ছাড়া মানুষ এখন স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অংশ হিসেবে হাঁটার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেকে হেঁটেই অফিসে যাচ্ছেন, আসছেন। এসব ক্ষেত্রেও আর হাই হিল পায়ে পরার সুযোগ নেই।
তাই বর্তমানে স্নিকার, লোফার, ব্লক হিল, লো হিল, ফ্লিপ ফ্লপ, ফ্ল্যাট জুতার চাহিদা বেড়েছে। বিভিন্ন স্বনামধন্য ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো মনোযোগী হয়েছে ফ্ল্যাট আর লো হিলের আরামদায়ক জুতো তৈরির দিকে। তবে হ্যাঁ এখনও নারীদের একাংশের সবচেয়ে পছন্দের তালিকায় রয়েই গিয়েছে হাই হিল।