নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা পুরনিগমের নির্বাচন ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এমনকি সেখানে নতুন বোর্ডও কার্যভার গ্রহণ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের বাকি পুরসভাগুলিতে কবে নির্বাচন হবে তা নিয়ে রাজ্যের সর্বস্তরে উৎসাহ তৈরি হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টে পুরভোট নিয়ে চলা মামলায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল তাঁরা হাওড়া, বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরনিগমের নির্বাচন আগামী ২২ জানুয়ারি করাতে চান। বাকি পুরসভার নির্বাচন করানোর জন্য তাঁরা ২৭ ফেব্রুয়ারির কথাও জানান। এরপরেই এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল। কিন্তু সেই বৈঠক বিজেপি যেমন বয়কট করল তেমনি বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করল বাম-কংগ্রেস। জগাই-মাধাই আর গদাইদের এহেন ওয়াকআউট ও বয়কটকে এদিন তীব্র কটাক্ষ হেনেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিন রাজ্য নির্বাচন কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিল দ্বিতীয় দফার পুরনির্বাচনের প্রাক্কালে। সেই বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন তৃণমূলের তরফে তাপস রায় ও দেবাশিস কুমার, বিজেপির তরফে অর্জুন সিং ও শিশির বাজোরিয়া, বামেদের তরফে রবীন দেব, পলাশ দাস, প্রবীর দেব, ও হাফিজ আলম সৈরানি এবং কংগ্রেসের তরফে এসেছিলেন আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় ও অসিত মিত্র। কিন্তু সেই বৈঠক শুরুর আগেই তা বয়কট করেন বিজেপির প্রতিনিধিরা। এই বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে শিশির বাজোরিয়া জানান, ‘আমাদের জানানো হয়েছিল ৫টি পুরনিগমের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু এখানে এসে আমরা জানতে পারি ৫টি নয়, ৪টি পুরনিগমের ভোট নিয়ে আলোচনা করতে কমিশন সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। আমরা হাওড়ার পুরভোট নিয়ে কমিশনকে জিজ্ঞাসা করলেও কমিশনার সৌরভ দাস কোনও সদত্তর দিতে পারেননি। তাই আমরা বৈঠক বয়কট করেছি। তবে ভোট বয়কট করা হবে কিনা তা দলের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অন্যদিকে বামেদের পক্ষ থেকে রবীন দেবও প্রায় একই কথা জানান। তিনি বলেন, ‘২৩ শে ডিসেম্বর নগরোন্নয়ন দফতর থেকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে তাতে লেখা হয়েছে হাওড়া সহ পাঁচটা পুরসভা সহ বাকি পৌরসভার নির্বাচন করাতে হবে, কিন্তু এখানে এসে সেই চিঠির বয়ান পাল্টে গেছে। বলা আছে চারটে পুরসভার নির্বাচন। অর্থাৎ হাওড়া বাদ। এটা কি হচ্ছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজ্য সরকারের কথা মতো চলছে।’ তবে বাম-কংগ্রেসের এই ওয়াকআউট ও বিজেপির বয়কটকে তীব্র কটাক্ষ হেনেছে তৃণমূল। তা৬দের দাবি, বিরোধীরা আসলে খুব ভালই জানে তাঁরা এই চারটি পুরসভার নির্বাচনেও গোহারান হারবে। সেই হার থেকে মুখ বাঁচাতে এখন হাওড়ার বিষয়টিতে তুলে ধরে তারা বৈঠক বৈঠক বয়কট করছে বা তা থেকে ওইয়াকআউট করছে। বাম-কংগ্রেস আর বিজেপির নেতারা কী দেখতে পারছেন না হাওড়ায় ভোট জটিলতার মূলে রয়েছে রাজ্যপালের অসহযোগীতার মনোভাব। তাঁর জন্যই তো হাওড়ায় পুরভোট করানো যাচ্ছে না। কেন তিনি বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সই না করে তা আটকে রেখেছেন? তিনি সই করে দিলেই তো এই ঘটনা ঘটে না। রাজ্যপালের জন্যই হাওড়ার বাসিন্দারা পুরপরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।