নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর রাজ্যের ১১টি মেডিক্যাল কলেজে ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই তালিকায় কলকাতার ৪ মেডিক্যাল কলেজ যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে উত্তরবঙ্গের দুই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালও। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং মালদা মেডিক্যাল কলেজে ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। একইসঙ্গে উত্তরবঙ্গের দুই মেডিক্যাল কলেজেও এই পরিষেবা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে খুশি উত্তরবঙ্গবাসী। এবার চিকিৎসা ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা মিলবে বলে মনে করছে উত্তরবঙ্গের মানুষ। এই বিভাগ চালু হলে রোগী পরিষেবার মান অনেকটাই উন্নত হবে বলে আশা করছেন তাঁরা। বিশেষ করে যে সমস্ত ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা শুরু না করতে পারলে রোগীর প্রাণ সংশয় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়, তেমন ঘটনায় এবার অন্তত বহু রোগীর জীবন বাঁচানো যাবে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারাও।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি রাজ্যের ১১টি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু করার কথা ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই তালিকায় রয়েছে কলকাতার ৪ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। কলকাতার যে ৪টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে এই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সেগুলি হল যথাক্রমে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ। একইসঙ্গে বর্ধমান, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজেও ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালু করা হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের মালদা মেডিক্যাল কলেজে ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও এই পরিষেবা মিলবে।
কী এই ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ? চিকিৎসকদের মতে, ছোট-বড় সব হাসপাতালেই জরুরি বিভাগে এক বা একাধিক মেডিকেল অফিসার থাকেন। থাকেন নার্স, চতুর্থ শ্রেণির কর্মীও। কিন্তু জরুরি বিভাগে এমন বহু রোগী আসেন, যাঁদের দ্রুত অপারেশন করার প্রয়োজন হয়, নতুবা অক্সিজেন দিতে হয়। আবার দুর্ঘটনায় জখম হয়ে কেউ হাসপাতালে এলে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হলে দ্রুত তার ব্যবস্থা করতে হয়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কেউ এলেও সেই রোগীর দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা শুরু করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে রোগীকে চিকিৎসা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে রেফার করে দেন। এর ফলে সেই বিভাগে রোগী পৌঁছানোর পরে চিকিৎসক এসে তাঁকে দেখতেই অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। বহু ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যু হয়। এই সমস্যা রোধ করতে এবার ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাগ চালুর সিদ্ধান্ত। এর ফলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তার চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া যাবে। প্রসঙ্গত এই বিভাগে মোট ১৩২ জন অধ্যাপক চিকিৎসককে নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার। পূর্ণাঙ্গ এই বিভাগ তৈরির জন্য প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজেই প্রফেসর, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর থেকে শুরু করে নতুন ১২টি পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে।