নিজস্ব প্রতিনিধি: আ- তুউউউউ করে ডাকতেই ঘাসের ঝোপের ভিতর থেকে লাফিয়ে বেরিয়ে এল চিতাবাঘ। সাক্ষাৎ যমদূত ধেয়ে আসতেই লাটে উঠল ছবি তোলা। প্রাণ বাঁচাতে দৌড় লাগালো শখের মোবাইল ফোটোগ্রাফারেরা। ঘটনাটি ঘটেছে ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের খাস বস্তি এলাকায়। বস্তির একটি প্রজেক্ট চা বাগান ও সংলগ্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে লাগাতার চিতাবাঘের হামলা চলছে। নতুন করে আরও একজন জখম হয়েছেন। তাকে শুল্কা পাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই নিয়ে গত কয়েকদিনে ৪ জন চিতাবাঘের হামলার মুখে পড়ল, যার মধ্যে দু’জন বনকর্মী রয়েছেন।
অপরদিকে গত বুধবার চিতাবাঘ ঘাপটি মেরে বসেছিল ছিল ঘাসের ঝোপে। তাকে আ-তুউউউউ করে ডাক দেয় একদল মোবাইল ফোটোগ্রাফার। আর সঙ্গে-সঙ্গে চিতাবাঘ ঝাঁপিয়ে আসে তাদের দিকে। এরপর কোনওক্রমে পালিয়ে বাঁচে তারা। ক্যামেরা লাগানো মোবাইল ফোন বাজারে আসার পর থেকেই একশ্রেণীর মানুষ কথায়-কথায় ছবি তোলে আর ফেসবুক-সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে। এর যেমন ভালো দিক রয়েছে। তেমনি রয়েছে বিপদও। উত্তর কিংবা দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় মাঝে মধ্যেই চিতাবাঘ, হাতি-সহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী লোকালয়ে চলে আসে। কিংবা এক জঙ্গল ছেড়ে অন্য জঙ্গলে যাওয়ার পথে হাতির দল মাঝে মধ্যেই জঙ্গলের রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়। সেই সময় বুনো হাতির ছবি মোবাইলবন্দী করতে গিয়ে অনেক পর্যটক এবং বাস যাত্রীরা জঙ্গলের রাস্তায় নেমে তাদের সঙ্গে সেলফি তোলে। এতে বুনো হাতির তেড়ে এসে অনেক পর্যটককে শুড়ে তুলে আছড়ে পর্যন্ত মেরেছে। কিন্তু তাতেও যেন ছবি তোলার শখ যায়নি তাদের।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন স্পোর-এর সাধারন সম্পাদক শ্যামা প্রসাদ পান্ডে বলেন, এইসব ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য আমরা ধারাবাহিকভাবে সচেতনতা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। প্রচারের ফলে কিছুটা হলেও সচেতন হয়েছে মানুষ। বন্যপ্রাণীর ছবি তুলতে গিয়ে মানুষ কীভাবে বিপদে পড়ে তা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর খবর বারবার সামনে এলেও একশ্রেণির মানুষের এখনও শিক্ষা হচ্ছে না। গ্রামে-গঞ্জে বন্যপ্রাণী বের হলেই এতো মানুষ চলে আসে ফলে উদ্ধার কাজ পর্যন্ত ব্যাহত হয়’।