নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারি মাসের শেষদিকে নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন ৩ জানুয়ারি থেকে অষ্টম শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য স্কুলের দরজা খুলে দিতে। সেই মতন ওই নির্দিষ্ট দিন থেকে ওই পাঁচ শ্রেনীর জন্য স্কুলের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেই স্কুল খোলার কারণ হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী ওই সাংবাদিক সম্মেলনেই জানিয়ে দেন, স্কুলে স্কুলে যাতে পড়ুয়ারা সরস্বতী পুজোর আয়োজন করতে পারে তাই পুজোর দুই দিন আগে স্কুলের দরজা খুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু নদিয়া জেলার শান্তিপুরে দেখা গেল স্কুল সরস্বতী পুজোর দুইদিন আগে খুলে গেলেও সেখানে পুজোর কোনও আয়োজন করা হয়নি। সেই কারনে এদিন ওই স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেই পড়ুয়াদের অভিভাবক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। আর সেই বিক্ষোভের মুখে পড়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পুজো না হওয়ার কারন হিসাবে জানালেন, ‘ইচ্ছা হয়নি তাই পুজো করিনি!’
সরস্বতী পুজো না হওয়া ঘিরে এদিন যে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তা অনুষ্ঠিত হয় শান্তিপুর পুরসভার কালিতলা এলাকার বিভূতিভূষণ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। জানা গিয়েছে, প্রতি বছর ওই স্কুলে সরস্বতী পুজো হলেও এই বছর তা হয়নি। এমনকী পুজো নিয়ে ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা স্কুল ম্যানেজমেন্ট কমিটি কারোর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লব বর্মণ। এদিন সকালে স্কুল খুলতেই পড়ুয়াদের অভিভাবক থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা এসে স্কুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এমনকি তাঁরা বার বার ওই শিক্ষকের কাছ থেকে জানতে চান কেন তিনি স্কুলে পুজোর আয়োজন করেননি। সেই বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই শিক্ষক শুধু একটি কথাই আউড়ে যান যে, ‘ইচ্ছা হয়নি তাই পুজো করিনি’। এর জেরে বিক্ষোভকারীরা আরও ক্ষুব্ধ হ্যে যান ও তাঁকে স্কুলের একটি ঘরের ভিতর ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজায় তালা বন্ধ করে দেন।
পরে সাংবাদিকদের লব বর্মণ বলেন, ‘পুজো বন্ধ রাখা কোনও নির্দেশিকা ছিল না, আবার পুজো করারও নির্দেশ ছিল না। কিন্তু আমার ইচ্ছে হয়েছিল পুজো না করার। তাই করিনি। এখনও স্কুল ঠিক ভাবে খোলেনি। আজকে থেকে পাড়ায় শিক্ষালয় শুরু হয়ছে। এই পরিস্থিতিতে আমার যা মনে হয়েছে তাই করছি।’ এদিনের ঘটনার জেরে নদিয়া জেলার স্কুলশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। স্কুলে স্কুলে যাতে পড়ুয়ারা সরস্বতী পুজো হয় তার জন্যই রাজ্য সরকার পুজোর দুই দিন আগে স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও কেন ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক পুজোর আয়োজন করেননি সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনাচক্রে এদিন ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা অভিযোগ করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কিছুটা হলেও মানসিক ভারসাম্যহীন।