নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী ১৩ তারিখ দেশে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের(Loksabha Election 2024) চতুর্থ দফার ভোট গ্রহণের দিন। সেদিন দেশের ৯৬টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। তার মধ্যে থাকছে বাংলার ৮টি লোকসভা কেন্দ্রও। সেই সব কেন্দ্রের মধ্যে আবার আছে নদিয়া জেলার(Nadia District) কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটিও। এই কেন্দ্রেরই সাংসদ ছিলেন মহুয়া মৈত্র। এবারও তৃণমূল(TMC) তাঁকে সেই কেন্দ্র থেকেই প্রার্থী করেছে। এদিন অর্থাৎ রবিবার, সেই মহুয়ার হয়েই নদিয়া জেলার কালীগঞ্জে পানিঘাটা উমা দাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে দলের নির্বাচনী সভায় যোগ দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। সেই সভা থেকেই তৃণমূলের সেনাপতি সরব হন সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে। সরব হন কৃষ্ণনগরের বিজেপি প্রার্থী অমৃতা রায়কে(Amrita Roy) নিয়েও।
এদিনের সভা থেকে অভিষেক বলেন, ‘ভিডিয়ো দেখেছেন সকলে? এখানে বলছে, বসিরহাট থেকে বিজেপির প্রার্থী রেখা পাত্রকে ২০০০ টাকা দিয়ে অভিযোগ করানো হয়েছে। যিনি বলছেন, তিনি বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। বাংলাকে যাঁরা কলুষিত করেছেন ক’টা ভোটের জন্য, ১৩ মে তাঁদের জবাব দিতে হবে। বিজেপি এখানে যাঁকে প্রার্থী করেছে, কেউ তাঁকে চেনেন না। নিজের পরিচয় দেন রাজমাতা হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী ইডি রাজ, সিবিআই রাজে বিশ্বাসী। তাঁরা জিতলে গরিবের ওপর অত্যাচার বাড়বে। আমাদের প্রার্থী জিতলে আমরা দিল্লির বুকে আন্দোলন করে গরিবের অধিকার আনার জন্য সরব হই। আমাদের মহিলা সাংসদ দোলা সেন, মহুয়ার চুলের মুঠি ধরেছিল, টাকা চাইতে গিয়েছিলেন বলে। সেই অমৃতা আপনাদের কাছে ভোট চাইতে গেলে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করবেন। বিজেপি নেতারা বলছেন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেবে। সেই ভিডিয়ো দেখাব। তাঁরা যাকে রাজ্যপাল করে পাঠিয়েছেন, সেই পদ কলঙ্কিত করেছেন বর্তমান রাজ্যপাল। মেয়ের বয়সি মেয়েকে শ্লীলতাহানি করেছেন। রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এই নিয়ে অবস্থান কী? তৃতীয় প্রশ্ন, সন্দেশখালি নিয়ে অনেক বলেছিল, গলা ফাটিয়েছিল, কাল সন্দেশখালি দেখেছেন তো? কাল দেখেছেন তো, প্রমাণিত হয়েছে, বাংলার মানুষকে কলঙ্কিত করতে গিয়ে, কলুষিত করতে গিয়ে বাংলার মানুষকে ছোট করেছে।’
এর পাশাপাশি অভিষেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখানে ২ বাস সভা করতে এসেছেন। কিন্তু ভাল করে ভেবে বলুন তো, গত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছেন এখানে? তাঁর প্রতিনিধি, প্রার্থীকে দেখেছেন? মহুয়া মৈত্র সারা বছর থাকেন মানুষের কাছে। আপনারা যাকে ভোট দিয়েছেন, গায়ের জোরে তাঁর পদ খারিজ করেছে। আপনারা যাকে ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন, বিজেপি তাঁর হাত থেকে ক্ষমতা নিয়ে নিচ্ছে। আমাদের সৈনিকেরা প্রশ্ন তুলেছেন বলে সাংসদ পদ খারিজ করে দিচ্ছে। আপনারা মোদির পুতুলকে নির্বাচিত করতে চান, নাকি নিজের প্রাণ বিপন্ন করে লড়াই করা মহুয়া মৈত্রকে নির্বাচিত করতে চান? কোনও তদন্ত হয়েছে? প্রমাণ এসেছে? বলছে পাসওয়ার্ড শেয়ার করেছে। বিজেপি নেতা, বিজেপি সাংসদদের সইয়ের পরে সংসদে ঢুকে সুরক্ষাবলয়ে ঢুকেছে। যাঁদের জন্য সুরক্ষা বিপাকে পড়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়েছে? বিজেপির নেতা বলেছেন মোল্লা। বাঙালিদের বলছে রোহিঙ্গা। মুসলমানদের বলছে পাকিস্তানি। ভারতে যাঁরা হিংসার বীজ পবন করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলছেন বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে তাঁকে ভোট দেওয়া। আমি বলব, মহুয়া মৈত্রকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে হারানো। মনে রাখবেন, যারা ভোট কেটে তৃণমূলকে হারাতে চান, সেই সিপিএম, কংগ্রেসকে একটা ভোটও নয়। কানে শুনে নয়, দেখে ভোট দিন। ১৩ মে, ২০১১ সালে রাজ্যে প্রথম বার তৃণমূল ক্ষমতায় এসেছিল। ওই দিন আবার তৃণমূলকে ভোট দিন। বাংলাকে যারা কুলষিত করছেন তা৬দের জবাব দেওয়ার জন্য, বাংলা বিরোধিদের বাংলা ছাড়া করার জন্য।’