নিজস্ব প্রতিনিধি: পরপর বিভিন্ন এলাকায় পড়ছে মাও পোস্টার (Poster)। ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। মাও (Maoist) যোগ ও পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৪ জনকে। ধৃতদের মধ্যে রাজু সিং ও পূজা সিংকে জেরা করে পুলিশ (Police) জানতে পেরেছে, তাঁদের ফোন করে টাকার বিনিময়ে পোস্টার লিখে তা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিতে বলা হত। ফোনেই নির্দেশ দেওয়া হত, পোস্টারের বয়ান কী হবে। মাও আতঙ্কের মাঝেই জঙ্গলমহলে ঘটেছে গুলি চালিয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা। আবার গত সোমবার ঘটেছে খুনের ঘটনা। যদিও এই কাজ মাওবাদীদের কী না জানা যায়নি। তবুও জঙ্গলমহল জুড়ে আতঙ্ক। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার সারেঙ্গা ও রাইপুরের ৩ টি জায়গায় ফের পড়ল মাওবাদী পোস্টার। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য।
মাও পোস্টার পড়েছে বাঁকুড়ার সারেঙ্গা থানার গোয়ালতোড় বাসস্ট্যান্ড, রাইপুর বাসস্ট্যান্ড এবং ভুসুড়ি গ্রামের পুকুরপাড়ে। পোষ্টারে হুমকি দিয়ে লেখা রয়েছে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানো হবে। আরও লেখা, তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে খেলা হবে। তারপরেই ‘হরিবোল’ লিখে পোস্টারের নিচে লেখা ‘সিপিআই মাওবাদী’। গোয়ালবাড়ি অঞ্চলের আঁধারিয়া এলাকার উদ্ধার হওয়া পোস্টারে লেখা রয়েছে, কিষাণজি মৃত্যুর বদলা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে পোস্টারে উল্লেখ রয়েছে, সরকারি কর্মীদের দূর্নীতির প্রসঙ্গ।
প্রসঙ্গত, মাও পোস্টারের ঘটনায় গত সোমবার বিনপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করে রাজু সিং (৩০) ও পূজা সিং (২২) কে। জেরায় তাঁরা বলেছিলেন, ফোনে তাঁদের পোস্টার লেখার নির্দেশ দিতেন কেউ। বলে দেওয়া হত বয়ান। তাঁরাই তা লিখে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে দিতেন, তার বদলে দেওয়া হত টাকা। ধৃতরা পুলিশের জালে ধরা পড়ে কাঁকো এলাকা থেকে। উদ্ধার করা হয়েছিল বেশ কিছু পোস্টার। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে বিচারক রাজুকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত ও পূজাকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার মুস্তাফা কামাল ওরফে টিপু সুলতান এবং অর্কদীপ গোস্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের মাওবাদী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে। টিপু বিশ্বভারতীর অর্থনীতির প্রাক্তন ছাত্র। অর্কদীপ বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। তাঁদের কাছ থেকেও মাও পোস্টার উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগেও এই ২ জনকে মাও যোগ সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
এদিকে গত সোমবার বেলপাহাড়ির ভুলাভেদার শ্যামনগর জঙ্গলে এক দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই দেহ ছিল ক্ষতবিক্ষত। ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল মাথার পেছনে। সেই সঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে পিঠেও। দেহ উদ্ধার করে তা পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। এই ঘটনায় এলাকা জুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছিল। যদিও পুলিশের দাবি, জুয়া খেলাকে কেন্দ্র করে বচসা থেকেই এই খুন। জানা গিয়েছে, মৃতে যুবকের নাম সমীরণ। বাড়ি থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে উদ্ধার হয়েছে তাঁর দেহ। যুবক বাইকে করে বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। তারপরেই খুন হন। পরপর এই ঘটনা এবং তারপর মঙ্গলবার ফের বাঁকুড়ার ৩ জায়গায় মাও পোস্টারকে কেন্দ্র করে জঙ্গলমহল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। ঘটনার তদন্তে পুলিশ। চলছে টহল ও জিজ্ঞাসাবাদ।