নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক (DM)। জেলা তাঁর আর তিনি কি না বসে থাকবেন তাঁর দফতরেই! জাবেন শুধু সদর বা সহজসাধ্য অঞ্চলে! তা আবার হয় না কি? তাঁকে খোঁজ রাখতে হয় জেলার প্রতিটি মানুষের। তাই মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়েন তিনি। ডিঙিয়ে যান পাহাড়। পেরিয়ে যান জঙ্গল। দুর্গম বলে তাঁর কাছে কিছু নেই। সুরেন্দ্র কুমার মীনাকে কুর্নিশ জানাতই জেলাবাসী। এখন তিনি নেটিজেনদের কাছেও জনপ্রিয়।
হাতে লাঠি, পিঠে ব্যাগ, সঙ্গে জলের বোতল আর ট্র্যাকস্যুট তাঁর সঙ্গী। রাজ্যের প্রশাসনিক মহলেও তাঁর জনপ্রিয়তা কম নয়। পাহাড় আর জঙ্গল পেরিয়ে তিনি কখনও খেলেন প্রান্তিক এলাকার শিশুদের সঙ্গে। আবার কখনও সমস্যার কথা কানে এলেও ছুটে যান। অতিমারি রোধে ভ্যাকসিন নিয়ে দৌড়েছেন তিনি। এত দায়িত্ববোধ আর আন্তরিকতা, তাই রাখতে হয় জেলাবাসীর আবদারও। উদ্বোধন করতে তাঁকে যেতেই হয় ‘না গেলেও চলে’ এমন অনুষ্ঠানেও।
উল্লেখ্য, তাঁর জেলায় আগেই চালু হয়েছিল পালকি অ্যাম্বুলেন্স। দুর্গম এলাকায় অসুস্থদের নামাতেই এই উদ্যোগ। তা উদ্বোধনে প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচুতে উঠেছিলেন তিনি। এবারে এই ধরণের অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন ছিল বক্সার লেপচাখাতে। মানুষ ও বন্যপ্রাণী সংঘাত কমাতেও বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। আলিপুরদুয়ারের বিশ্বকর্মা ঝোরায় মধু চাষের পাইলট প্রোজেক্ট শুরু করেছেন তিনি। এর আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক ছিলেন তিনি। রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আয় বাড়াতে বন্ধ করেছিলেন বেআইনি বালি ও মোরামের খাদান। স্বাভাবিক ভাবেই আয় বেড়েছিল দফতরের। ভূটান সীমান্তের ছোট্ট গ্রাম আদমা। প্রায় ২০ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে হয় এই গ্রামে। সময় লাগে প্রায় ৬ ঘণ্টা। ১০০জন গ্রামবাসীকে টিকা দিতে এখানেও পায়ে হেঁটে এসেছিলেন তিনি। সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর দফতর ও সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মীরাও। ২০১২ সালের আইএএস অফিসার তাই সহকর্মী, জুনিয়র ও যারা আইএএস প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের কাছে আদর্শ। রাজ্যের গর্ব। তিনি কি বলছেন এই প্রসঙ্গে? তাঁর ছোট্ট উত্তর একটাই, ‘এটাই আমার কাজ’।