নিজস্ব প্রতিনিধি: ৮১ লাখ টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগ জলপাইগুড়ি পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগ দায়ের করেছে পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, স্ত্রী-ছেলেকে পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসাবে দেখিয়ে বছরের পর বছর ধরে পেনশন পাইয়ে দিচ্ছিলেন পুরসভার এক কর্মী। কিন্তু অবশেষে সেই ফন্দি ধরা পড়ে যায়। মূল অভিযুক্ত ওই কর্মী অবসর নিতেই ফাঁস হল সমস্ত তথ্য।
সুত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি পুরসভার পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়টি দেখাশোনা করতেন অরিঞ্জিত ঘোষ নামে এক কর্মী। কয়েকমাস আগে চাকরি থেকে তিনি অবসর নিয়েছেন। তাঁর অবসরের পরের মাসে পেনশন সংক্রান্ত বিল তৈরী করতে গেলে দেখা যায় বিগত মাসগুলির তুলনায় অনেক কম টাকা চলতি মাসের পেনশনের জন্য লাগছে। এর পর বিষয়টি খতিয়ে দেখেন পুর কর্তৃপক্ষ। আর তখনই সামনে আসে পুরো বিষয়টি। ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে পুর কর্তৃপক্ষ। শুরু করা হয় বিভাগীয় তদন্ত। সেই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়তেই শনিবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল এবং ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় এদিন অ্যাকাউন্ট বিভাগের অবসর প্রাপ্ত ওই কর্মী, তার স্ত্রী ও পুত্র সহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় এই ঘটনা নিয়ে জানান, বিভাগীয় তদন্তে গরমিল সামনে আসার পর অরিঞ্জিত ঘোষ সহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অরিঞ্জিত ঘোষ পুরসভার কর্মীদের পেনশনের বিষয়টি দেখতেন। তিনি তার স্ত্রী, ছেলেকে পুরসভার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী দেখিয়ে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতেন। শুধু ছেলে বা স্ত্রী নয় আরও অনেকের নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা ট্রান্সফার করেছেন ওই ব্যক্তি। এর পর তাদের অ্যাকাউন্টে পাঠানো টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিতেন অভিযুক্ত অরিঞ্জিত ঘোষ। এই চক্রের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে তাদের বয়ানের ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত ৮১ লাখ টাকা তছরুপ হয়েছে বলে জানান তিনি। এই তছরুপ কাণ্ডে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ সেই অরিঞ্জিত ঘোষ বাড়িতে তালা দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে, ফলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।