নিজস্ব প্রতিনিধি: খনার বচন বলে, মঙ্গলে উষা বুধে পা, যেথা খুশি সেথা যা। অর্থাৎ মঙ্গল বুধের মিলনক্ষণ ভোররাতে বাড়ি থেকে কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা করলে সেই উদ্দেশ্য সফল হবেই হবে। যদিও অর্জুন সিং বুধ ভোরে ফুল বদল করছেন না। তাঁর ফুলবদলের সম্ভাবনা আগামিকাল গুরুবারে। মানে বৃহস্পতিবারে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরে বাহুবলী নেতা অর্জুন সিং(Arjun Singh) কার্যত তৃণমূলের(TMC) আদ্যিকালের নেতা। বাম জমানাতেও তিনি হার্মাদদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজ সংগঠনের মাধ্যমে ভোটে হয়ী হয়েছেন ভাটপাড়া থেকে। উনিশের ভোটের ঠিক আগে সেই অর্জুনই পা বাড়ান বিজেপির দিকে। টিকিটও পেয়ে যান লোকসভা নির্বাচনের জন্য। জিতেও যান। কিন্তু একুশের ভোটের পরে সেই অর্জুনই পাল্টি খেয়ে ফিরে আসেন তৃণমূলে। ভেবেছিলেন ২৪’র ভোটের টিকিট পাবেন। কিন্তু সেই হিসাব মেলেনি। তৃণমূল তাঁকে টিকিটই দেয়নি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে(General Election 2024) লড়াই করার জন্য। আর তারপরে পরেই আবারও পাল্টি বাহুবলীর। বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP) সূত্রে খবর আগামিকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ১৪ মার্চ আবারও হাতে পদ্ম তুলে নিতে চলেছেন অর্জুন।
সূত্রের দাবি, আগামিকাল সকালেই দিল্লি থেকে কলকাতায় আসছেন বাংলার জন্য বিজেপির দলীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পান্ডে। তাঁর উপস্থিতিতেই বিজেপির কার্যালয়ে ঘটতে চলেছে অর্জুনের পদ্মে প্রত্যাবর্তন। খুব সম্ভবত বিজেপি এবারেও তাঁকে ব্যারাকপুর(Barracpur Constituency) থেকেই প্রার্থী করতে চলেছে। যদিও সমীক্ষকদের দাবি, অর্জুন এবার বিশেষ সুবিধা করে উঠতে পারবেন না। কেননা তঁর নিজস্ব সংগঠনে তৃণমূল অনেক আগেই ধস নামিয়ে দিয়েছে। তাঁর অনুগামীদের অনেকেই এখন জোড়াফুলে। তাঁরা সম্ভবত তৃণমূলেই থেকে যাচ্ছেন। তাঁরা আর ফুলবদল করছেন না। আবার ব্যারাকপুরে বিজেপির নিজস্ব সংগঠনও কার্যত তলানিতে। তাছাড়া এবারে আর উনিশের মতো মোদি হাওয়া নেই, যে অর্জুন ঢ্যাং ঢ্যাং করে জিতে যাবেন। সব থেকে বড় কথা অর্জুনকে নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে যে ভয়-ভীতি-সমীহ ছিল তা এখন অনেকাংশেই ফিকে হয়ে গিয়েছে। আর তাই বিজেপিকে ব্যারাকপুর থেকে অর্জুনকে প্রার্থী করলেও তাঁর জয়ের সম্ভাবনা কিন্তু প্রশ্নের মুখে। সব থেকে বড় কথা ব্যারাকপুরের মধ্যেই বিজেপিতে একটি শক্তিশালী অর্জুন বিরোধী গোষ্ঠী আছে। তাঁরা অর্জুনের এই প্রত্যাবর্তন ও বিজেপির টিকিট প্রাপ্তিকে ভাল চোখে দেখছেন না। সেক্ষেত্রে সম্ভাবনা থাকছে বেশ তীব্র ভাবেই যে বিজেপির অর্জুন বিরোধী ভোট চলে যাবে তৃণমূলে।