নিজস্ব প্রতিনিধি: দুর্গা পুজো (Durga) তো হত বসন্তেই। তাই তা বাসন্তী। পুরাণ অনুযায়ী, রামচন্দ্র শরৎকালে অকালবোধন করেছিলেন দেবীর। সেই থেকে শারদোৎসব। এখন বাসন্তী (Basanti) উৎসবের সময়। জমিদার স্বপ্নাদেশ পেয়ে উত্তর দিনাজপুরের কুজিয়া গ্রামে শুরু করেন বাসন্তী পুজোর। এখানে দেবী পরিচিত চৈতাবালি বলে। তবে এখন দেবীর (Goddess) আরাধনা হয় চারটি গ্রামের উদ্যোগে।
স্থানীয়দের মুখে শোনা যায়, আজ থেকে প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগে এই পুজোর (Puja) প্রচলন হয়েছিল। কথিত, হরিপুরের জমিদার হরি নারায়ণ চৌধুরী বাংলাদেশ থেকে বানগড় যাবার সময় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। সে সময় অবিভক্ত বাংলাদেশের এই খানেই রাত্রিবাস করেন জমিদার। রাতের বেলায় ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। স্বপ্নে আসেন দেবী দুর্গা। আদেশ দেন, এই সময় দেবীকে বাসন্তী রূপে আরাধনা করার। স্বপ্নাদেশের পরেই হরি নারায়ণ এই অঞ্চলে প্রচলন করেন বাসন্তী পুজোর। দেবী এখানে চৈতাবালি নামে পরিচিত।
উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার কালিয়াগঞ্জের ৪ নম্বর বোচাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের কুজিয়া গ্রামে প্রতি বছর প্রথামাফিক এই পুজোর আয়োজন করা হয়। আটঘরা, কুজিয়া, মহাগাও এবং মুজিয়া, এই চার গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে আয়োজিত হয় পুজোর।
আগে মাটির দেওয়ালে খড়ের ছাওনি দিয়ে হত পুজো। পরবর্তীকালে দেওয়া হত টিনের ছাউনি। কয়েক বছর আগে ইট দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পাকা মন্দির। মানুষের বিশ্বাস, মায়ের অসীম কৃপা। কারও মনস্কামনা অপূর্ণ রাখেন না। তাই এই চারগ্রামই শুধু নয়, দূর দূরান্ত থেকে পুজো দিতে আসেন মানুষ। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি, বালুরঘাট, মালদা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও দেবীর কাছে ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। বাসন্তী পুজো উপলক্ষ্যে চারটি গ্রামেই (Villege) একাদশী পর্যন্ত চলে নিরামিষ। শুধু তাই নয়, এখানে মেলায় বসা দোকানের খাবার সামগ্রীও নিরামিষ। প্রতি বছরের মত এই পুজো দেখতে এবারেও আসছেন বিভিন্নস্তরের মানুষ। রাজনৈতিক, বিশিষ্টজন বা সাধারণ মানুষ বাদ নেই কেউই। দেবীর কাছে যে উচ্চ-মধ্য-নিম্ন ভেদাভেদ নেই। সকলেই সমান। সকলেই সন্তান।
এই সময়ে বাসন্তী পুজোর মত বিভিন্ন জায়গায় পুজো হয় দেবী অন্নপূর্ণার (Annapurna)। আসলে অন্নপূর্ণা- দুর্গা, সে তো বিভিন্ন রূপ মাত্র। দেবী তো একজনই।