নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) কপালে কী এবার বড় দুঃখ অপেক্ষা করছে? কারণ বৃষ্টির(Rain) ঘাটতি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিগত জুন মাসে উত্তরবঙ্গে(North Bengal) ভারী বর্ষণ হলেও রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে বৃষ্টি ঘাটতি প্রায় ৫০ শতাংশ ছুঁয়ে ফেলেছিল। জুলাই মাসেও সেই ছবি খুব একটা বদলাচ্ছে না। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গে(South Bengal) স্বাভাবিকের থেকে ৩৭ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। আর মে থেকে জুলাই(July) পর্যন্ত বাংলায় বৃষ্টি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১ শতাংশ। আর তাই প্রশ্ন উঠেছে বাংলা কী এবার খরার মুখ দেখতে চলেছে? যদিও আবহাওয়াবিদদের দাবি, পরিস্থিতি অতটা খারাপের দিকে না গেলেও এবছর বাংলায় স্বাভাবিকের থেকে কমই বৃষ্টি হবে। উত্তরবঙ্গে এখন ভারী বৃষ্টি চলবে, দক্ষিণবঙ্গে কার্যত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিই হবে। তবে পুজোর মুখে দক্ষিণবঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির তীব্র সম্ভাবনা থাকছে।
রাজ্যের কৃষি দফতরের রিপোর্ট বলছে, জুন মাসের মতোই বৃষ্টির ঘাটতি বেশ ভালই চোখে পড়ছে জুলাই মাসেও। জুলাই মাসে ভালো বৃষ্টি হলে তা চাষের পক্ষে উপকার। কিন্তু সেই পর্যাপ্ত বৃষ্টির দেখাই মিলছে না। রাজ্যে খরিফ মরশুমে আমন ধানের চাষ মূলত বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। অথচ এবছর সেই বৃষ্টির দেখা না মেলায় কার্যত মাথায় হাত পড়েছে কৃষকদের। যদিও দক্ষিণবঙ্গের কিছু কিছু জায়গায় চাষিরা সেচের জল ব্যবহার করে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিন্তু তারপর তো বৃষ্টি দরকার, নাহলে ধানের চারা রোপণ করা যাবে না। অর্থাৎ ধাক্কা আসবে সরাসরি ধানের ফলনে। এই ধানের চাষই কিন্তু গ্রামীণ বাংলার অর্থনীতির মূল চাকা। স্বাভাবিক ভাবেই তাই চিন্তা বাড়ছে রাজ্যের কৃষি দফতর থেকে রাজস্ব দফতরের আধিকারিকদের। কোভিড আর লকডাউনের জেরে অর্থনীতি এমনিতেই ধাক্কা খেয়েছে, এরপরে এখন যদি ধান চাষ ধাক্কা খায় তাহলে বাংলার কৃষকসমাজ আবারও ধাক্কা খেতে চলেছে।
চলতি মরশুমে মে ও জুন মাসে বাংলায় সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। যেটুকু বৃষ্টি হয়েছে তা উত্তরবঙ্গে। ফলে দক্ষিণবঙ্গে সেই সময় থেকেই বৃষ্টি ঘাটতি পরিস্থিতি তৈরি হয়। জুলাই মাসে রাজ্যে সামগ্রিক ভাবে প্রায় ৪৫ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। জেলায় জেলায় বৃষ্টির ঘাটতিও তাই মাথা চাড়া দিচ্ছে। নদিয়া জেলায় বৃষ্টি ঘাটতির পরিমাণ ৭৯ শতাংশ, মুর্শিদাবাদ জেলায় ৮১ শতাংশ, মালদা জেলায় ৯৫ শতাংশ, কোচবিহার জেলায় ৯০ শতাংশ, বীরভূম জেলায় ৭১শতাংশ, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৬৩ শতাংশ, হুগলি জেলায় ৫৬ শতাংশ ও উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ৫৭ শতাংশ। তবে পুরুলিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই ঘাটতি কমের দিকে। শুধুমাত্র হাওড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে জুলাইয়ে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আপাতত দক্ষিণবঙ্গে হাল্কা থেকে মাঝারি বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। এখনই ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গের ক্ষেত্রে।