নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ দিদি আর ভাগ্নীকে বাঁচাতে গিয়ে ভাইফোঁটার দিনেই দিদির শ্বশুরবাড়িতে খুন হয়ে গেল ভাই। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ডহারবার থানার কুলেশ্বর এলাকায়। ভাইয়ের প্রাণহানির পর চোখের জল বাঁধ মানছে না বধূর। তাঁর একটাই আক্ষেপ, ‘ডাকলাম বলে ভাইটা চলে গেল।’ ভাইফোঁটার দিনই ভাইয়ের এমন মৃত্যু মানতে পারছেন না মিঠুনের দিদি। তিনি দাবি করেছেন, এর আগেও একাধিকবার ভাসুর ও তার ছেলে তাদের উপর হামলা চালায়। মারধর, গালিগালাজ লেগেই থাকত। আগেই পুলিশের কাছে প্রায় তিনবার অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি। তা সত্ত্বেও প্রাণহানির মতো ঘটনা রুখতে পারা গেল না।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ এই ঘটনায় পরেশ মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারপরই জানা গিয়েছে সে সক্রিয় বিজেপি কর্মী বলেই পরিচিত। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম মিঠুন সর্দার(২৭)। তাঁর বাড়ি ডায়মন্ডহারবার মহকুমার উস্তি থানার সাতঘড়া এলাকায়। কুলেশ্বরে মিঠুনের দিদির শ্বশুরবাড়ি। সেই দিদির বাড়িতেই মিঠুনের জামাইবাবু জগন্নাথ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর দুই ভাই পরেশ ও অজয়ের একটি জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। বুধবার সে বিবাদ চরমে পৌঁছয়। সকাল থেকেই শুরু হয় গালিগালাজ। বেলা যত বাড়তে থাকে, ততই অশান্তিও তুমুল আকার নেয়। সন্ধ্যার দিকে ওই বিতর্কিত জমি ঘেরা পাঁচিল ভাঙার চেষ্টা করে পরেশ ও অজয়।
এলাকাবাসীর দাবি, পরেশ এবং অজয় তাদের ভাইয়ের স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকজনকে টার্গেট করে। মিঠুনের সঙ্গে তাঁর আরেক দিদির স্বামীও বুধবার সন্ধ্যায় কুলেশ্বরে গিয়েছিলেন। তাঁদের দেখেই আরও ক্ষেপে যায় পরেশ ও অজয়। তারা এই দুইজনকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করে। শুধু তাই নয়, কিছু বুঝে ওঠার আগে গুলি চালাতে শুরু করে তারা। একটি গুলি মিঠুনের বুকে লাগে। এরপরেই প্রাণ হারান মিঠুন। ঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দেয় দুই অভিযুক্ত পরেশ ও অজয়। পুলিশ কাছে এখনও পর্যন্ত অজয়ের খোঁজ মেলেনি। এই পুরো বিসয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।