নিজস্ব প্রতিনিধি: চেষ্টা করে যাচ্ছেন অনেকদিন আগে থেকেই। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দিনের আলো দেখতে পাননি। প্রতিবারই আদালত থেকে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে তাঁকে। সোমবারও সেই ঘটনারই পুনঃরাবৃত্তি ঘটল। নেতাই(Netai) গণহত্যার মূল মাথা তথা প্রধান অভিযুক্ত সিপিএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের(Rathin Dandapat) জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। ওই একই মামলায় অন্য দুই অভিযুক্ত পিন্টু রায় ও গণ্ডিবন রায়ের জামিনের আবেদন আবশ্য মঞ্জুর করেছে আদালত। নেতাই গণহত্যা মামলায় অভিযুক্ত পিন্টু ও গণ্ডিবন ১১ বছরেরও বেশি সময় জেল খাটছেন। চার্জশিটে সিবিআই(CBI) এই দুজনকে ‘গণহত্যার বন্দুকবাজ’ বলে অভিযুক্ত করেছে। তারপরেও তাঁরা এদিন জামিন পেয়ে যাওয়ায় খুশি হননি সিবিআই আধিকারিকেরা। তাঁরা এই জামিন ঠেকাতে ডিভিশন বেঞ্চে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে রথীন দণ্ডপাট, পিন্টু রায় ও গণ্ডিবন রায়ের জামিনের আবেদন সংক্রান্ত মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। সেখানেই পিন্টু ও গণ্ডিবনের আইনজীবী রণদেব সেনগুপ্ত দাবি করেন, এই ঘটনায় ১১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। তাঁরা কেউ টিআই প্যারেডে ধৃতদের চিহ্নিত করতে পারেননি৷ কিন্তু রথীনের বাড়ি থেকেই সেদিন গুলি চলেছিল, যার দায়ভার তিনি এড়িয়ে যেতে পারেন না। এরপরেই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ ৫০ হাজার টাকা করে ব্যাক্তিগত বন্ডে পিন্টু ও গণ্ডিবনকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেয়। যদিও রথীন দণ্ডপাটের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম মহকুমার বিনপুর-১ ব্লকের নেতাই গ্রামে সিপিআই(এম) নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে বিক্ষোভকারী স্থানীয় গ্রামবাসীদের ওপর গুলি চালিয়েছিল হার্মাদরা। সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান ৯জন। আহতের সংখ্যা ৪০ এর ওপর। এই ঘটনায় রথীনের নাম জড়ানোর পাশাপাশি নাম জড়িয়েছিল রাজ্যের দাপুটে বাম নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্ত ঘোষেরও। কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৩ সালে নেতাই গণহত্যার তদন্তভার সিবিআইকে দেয়। ২০১৪ সালে সিবিআই ২০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়৷ সেখানে রথীন দণ্ডপাট, পিন্টু রায় ও গণ্ডিবন রায়ের নামও ছিল। পরে তাঁরা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারও হন। এদিন পিন্টু ও গণ্ডিবন জামিন পেলেও তাঁরা ৫০ হাজার টাকা জোগাড় করতে পারবেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।