নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ‘যৌনপল্লী’ নাম শুনলেই শিক্ষিত সভ্য সমাজ হেয় দৃষ্টিতে দেখে। অথচ এই যৌনপল্লীর কর্মীদের দ্বারাই সভ্য সমাজের আদলে আবৃত মানুষদের চাহিদা পূরণ হয়। ভারতের ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের মুহূর্তে এসেও যৌনপল্লী নিয়ে নিম্নদৃষ্টির মানসিকতা এই সমাজ থেকে মুছে যায়নি। তাই যৌনকর্মীদের শিশুরাও অবহেলিত থেকে যায়। কলকাতায় অবস্থিত যৌনপল্লী সোনাগাছি ছাড়া দ্বিতীয় বৃহত্তম যৌন পল্লী বসিরহাটের মাটিয়া। সরকারি হিসাবে সেখানকার যৌনকর্মীর সংখ্যা প্রায় ১০০০। বাস্তবে সংখ্যাটা আরও বেশি। এনাদের সন্তানেরা আর পাঁচটা শিশুর মত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থেকে অনেকটাই দূরে থাকে যৌনকর্মীদের সন্তানেরা। এবার তাঁদের জন্য এক ভিন্ন ভাবনা।
বসিরহাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস কে. এর নির্দেশে মাটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তাপস ঘোষের সহযোগিতায় ও বসিরহাট দুর্বার সমিতির মাটিয়া শাখার উদ্যোগে বসিরহাটের বসিরহাট ২নং ব্লকের মাটিয়া যৌনপল্লীতে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এক শিক্ষাঙ্গন। যেখানে শিক্ষার আলো পেতে চলেছে এই শিশুরা। সেখানে তারা প্রাথমিক পর্যায়ে এক বছর বয়স থেকে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত বাচ্চাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আগামী দিনে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী অবধি ক্লাস চালু করে স্কুলটিকে বাড়ানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের। ইতিমধ্যেই সেই স্কুলের পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য পাঠ্য পুস্তক, খেলার জিনিসপত্র ও আসবাবপত্র সহ সমস্ত কিছুই প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। অপেক্ষা শুধু উদ্বোধনের।
যৌন কর্মীরা জানান, তারা তাদের সন্তানকে বাইরে পড়াতে গেলে একাধিক সমস্যার সম্মুখীন হন। তাই এই ধরনের উদ্যোগকে তারা সাধুবাদ জানিয়েছেন। যৌনপল্লী থেকে বেরিয়ে এই শিশুরা যখন অন্য স্কুলে বা সমাজের অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মিশতে চায় তখনই ধেয়ে আসে নানান ধরনের কটুক্তি।সঙ্গে রয়েছে অন্য শিশুদের অভিভাবকদের অনীহা সহ একাধিক ভর্ৎসনা। তাই এই সমস্ত কচিকাঁচাদের বেড়ে উঠতে এই শিক্ষাঙ্গন হয়ে উঠবে নতুন স্বাধীনতার পথ।