নিজস্ব প্রতিনিধি: মাত্র ২০টি ওয়ার্ডের(Wards) একটি পুরসভা। জেলার অন্যতম মহকুমা শহরও(Sub Divisional Town)। কিন্তু সেই পুরসভাতেই রয়েছেন ৭০০ পুরকর্মী(Municipality Workers) যাদের মাইনে(Salary) দেওয়ার ক্ষমতা নেই স্থানীয় পুরবোর্ডের। সেই শহর তথা পুরসভার নাম কাঁথি(Contai)। পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার অন্যতম শহর এবং রাজ্য রাজনীতিতে যার পরিচিতি বিশেষ ভাবে রয়েছে ‘অধিকারীদের শহর’ হিসাবে। সেই কাঁথি পুরসভাতেই ঘনঘন চেয়ারম্যান ও প্রশাসক বদলের সুবাদে এ পর্যন্ত ৭০০জন পুরকর্মী নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ওই ৭০০জন পুরকর্মীকে বেতন দেওয়ার মতো অর্থই নেই ওই পুরসভার হাতে। মার্চ মাস শেষ হতে চলল অথচ বহু অস্থায়ী কর্মীর ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন এখনও হয়নি। পুরবোর্ডের অবস্থা এখন এতটাই শোচনীয় যে অন্নপ্রাশন কিংবা বিয়ের গিফ্ট কেনার মতো টাকাও নেই ওই পুরসভার তহবিলে।
আরও পড়ুন PGAY-তে বাংলা বঞ্চিত, দেবের প্রশ্নে মানল কেন্দ্র
কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল মান্না এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘প্রতি মাসে ৭০০কর্মীকে আমাদের মাইনে দিতে হয়। সেই মাইনে মাসিক ২৮হাজার টাকা পর্যন্ত আছে। আগে যাঁরা ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা এভাবে মাইনে বাড়িয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাটাচ্ছি। ১০-১১বছর হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়েনি। আয় না বাড়লেও ব্যয় বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে তহবিলের উপর চাপ পড়েছে। এরপরও আমরা কোথাও পুরসভার সম্পত্তি বেচে দিইনি। সেসব সুরক্ষিত রেখেই আমরা চ্যালেঞ্জ নিচ্ছি। সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প কার্যকর করার জন্য প্রতি বাড়ি থেকে দৈনিক এক টাকা সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পুরসভা। আগামী বোর্ড মিটিংয়ে এটা পাশ করানো হবে। পাশাপাশি হোটেল, রেস্তরাঁ এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই বাবদ বেশি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন 1000 কোটিতে নতুন ৮টি Sub Station তৈরি করছে WBSEDCL
জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের মে মাসে কাঁথি পুরসভার বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর প্রশাসক বসানো হয়। পূর্বতন বোর্ডের চেয়ারম্যানদেরই প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। কাঁথির পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী প্রশাসক হয়েছিলেন। তারপর সিদ্ধার্থ মাইতি এবং শেষে হরিসাধন দাস অধিকারী প্রশাসক হন। গত বছর পুরসভা নির্বাচন হয়। তারপর বোর্ড গঠন হয়। প্রতিটি ধাপে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। এমনকী ২০২১ সালে বোর্ড গঠনের পরও বেশ কয়েকজন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে। পুরসভার আর্থিক অবস্থার দিকে নজর না দিয়ে এই মাত্রাতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের খেসারত এখন দিচ্ছে পুরসভা। এই মুহূর্তে পুরসভার প্রতি মাসে খরচ প্রায় ৮৪লক্ষ টাকা। আগে এটা ছিল ৫৬লক্ষ টাকা। অর্থাৎ খরচ অনেকটাই বেড়েছে। সেই তুলনায় আয় বৃদ্ধি হয়নি। যেকারণে পুরসভার কর্মীদের মাইনে সময়মতো দিতে পারছে না পুরসভা।