নিজস্ব প্রতিনিধি: ৩৪ বছরের শাসনে বাংলা জুড়ে লালসন্ত্রাসের স্টিম রোলার চালিয়েছিল সিপিআই(এম)। সেই সন্ত্রাসের তালিকায় যেমন জায়গা করে নিয়েছিল গণহত্যা(Mass Killing), গণধর্ষণ, লুঠ, মারধর, শ্লীলতাহানি, বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন, মাঠের ফসল লুঠ, পুকুরে বিষ ঢালা তেমনি জায়গা করে নিয়েছিল সাঁইবাড়ি(Snaibari), মরিচঝাঁপি, বাণতলা, ধানতলা, সূচপুর, ছোট আঙাড়িয়া, সিঙ্গুর(Singur), নন্দীগ্রামও(Nandigram)। এখন বাংলার বিধানসভা থেকে বিলুপ্ত হয়েও সেই সিপিআই(এম) এর বিন্দুমাত্র লজ্জা যে জাগেনি সেটা চূড়ান্ত গুণ্ডাগার্দি করে এখন নিত্যদিন দেখিয়ে দিচ্ছে সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন। আনিস খান(Anis Khan) খুনের ঘটনায় বিগত দুই দিনে সেই বাম ছাত্র ও যুব সংগঠনের সদস্যরা যে ভাবে থানা থেকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যে ভাবে হামলা চালাচ্ছেন তাতেই প্রমাণিত হয়ে যাচ্ছে, সিপিএম আছে সিপিএমেই(CPIM)। সন্ত্রাস আর গুণ্ডাগার্দি ভিন্ন তাঁরা কিছুই জানেনা। এদিনও হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ জেলার এসপির অফিসে যেভাবে লাঠি, বাঁশ, রড, ইট নিয়ে হামলা চালানোর পাশাপাশি যেভাবে খোলা রাজপথে বোমাবাজি করে গেল তাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সিপিএমের গুণ্ডামি।
আনিস খান খুনের ঘটনায় বাম ছাত্রযুব সংগঠনগুলি আগে থেকেই হাওড়া গ্রামীন জেলা পুলিশের সুপারের অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর কথা জানিয়ে দিয়েছিল। যদিও কবে সেই ঘেরাও বিক্ষোভ হবে তা জানানো হয়নি পুলিশকে। শনিবার হুট করে ডিওয়াইএফআই-এর(DYFI) রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হাওড়া জেলার সদর মহকুমার পাঁচলা(Panchla) থানার রানীহাটি মোড় থেকে মিছিল করে পাঁচলার পানিয়াড়া(Paniyara) এলাকায় হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের কার্যালয়ে আসে। আর আসা মাত্রই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, বোতল, বোমা ছুঁড়তে শুরু করে সিপিএমের ওই ছাত্রযুবরা। কার্যত মুড়ি মুড়কির মতো পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ার পাশাপাশি বোতল বোমাও ছোঁড়া হয়। তাতেই বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী(Police) আহত হন। পাশাপাশি পুলিশের একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে তাতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টাও করা হয়। এক সময় পুলিশ বাধ্য হয় কাঁদানো গ্যাস ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রখান করতে। সেই সঙ্গে শুরু হয় ধড়পাকড় ও মৃদু লাঠিচার্জ। সেই সময়েই মীনাক্ষী সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আরও বেশ কিছু বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।
বস্তুত আনিস খান খুনের ঘটনায় বামেরা অনেক আগে থেকেই আন্দোলন শুরু করেছে। কিন্তু আন্দোলনের নামে তাঁরা এখন রাজপথের ওপর চূড়ান্ত গুণ্ডামি শুরু করেছে। বামেরা কোনওদিন যদি আবারও বাংলার ক্ষমতায় ফেরে তাহলে তাঁদের হাত ধরে বাংলার বুকে যে আবারও লালসন্ত্রাস ফিরে আসবে সেটা কিন্তু এই গুণ্ডামিই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। আর এই কারণেই সিপিএমের এই আচরণের চূড়ান্ত নিন্দা শুরু করেছেন বাংলার বিশিষ্টজনেরা। আগামিকালই রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার নির্বাচন রয়েছে। ঠিক তার আগে বাম ছাত্রযুবরা যে গুণ্ডামি তুলে ধরল তা দেখে আগামিকাল আর কতজন মানুষ বামেদের ভোট দেবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কার্যত রাজ্যের রাজনৈতিক বিশারদদের অনুমান, সিপিএমের এই গুণ্ডামির জেরে এই পুরনির্বাচনে সব থেকে বেশি লাভবান হবে তৃণমূল কংগ্রেস। কেননা এদিন পুলিশ গুলি না চালিয়ে যেভাবে নিজেরা আহত হয়েও পরিস্থিতি কড়া হাতে সামাল দিয়েছে তা রীতিমত প্রশংসার যোগ্য। আর তার রেশ পড়বে তৃণমূলের বাক্সে। তুলনায় ভোট হারাবেন বামেরা। সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও লাভবান হতে পারে বিজেপি।