নিজস্ব প্রতিনিধি: বাজার করতে বাড়ি থেকে বের হতেই রাস্তায় প্রকাশ্য দিবালোকে খুনের হুমকির মুখে পড়ল পুরুলিয়া(Purulia) জেলার ঝালদা(Jhalda) পুরসভার খুন হয়ে যাওয়া চারবারের কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর(Tapan Kandu) ছেলে দেব কান্দু(Deb Kandu)। বছর উনিশের দেবকে শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ রাস্তায় পথ আটকে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় স্থানীয় এক যুবক। তপনবাবুর পরিবারের দাবি, ভীম তিওয়ারি নামে ওই যুবক তৃণমূলকর্মী। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ভীম তাদের দলের সমর্থক বা সদস্য কোনওটাই নয়। বরঞ্চ এলাকায় সে সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসাবেই পরিচিত। ঘটনার জেরে তপনবাবুর পরিবার ঝালদা থানায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন। যদিও সেই অভিযোগের পরেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করায় পারিবারিক নিরাপত্তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন তপনবাবুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু(Purnima Kandu)।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ দেব বাজারে যাচ্ছিল। সেই সময় রাস্তায় তার পথ আটকে দাঁড়ায় ভীম। অভিযোগ, তারপরেই ওই যুবক দেবকে হুমকি দিয়ে বলে, ‘তোরা অনেক বেড়েছিস। ও তো গেল। এর পর তুইও যাবি। আমাদের তোরা চিনিস না। সতর্ক হয়ে যা। না হলে বিপদ আছে। তপনের একটাই ছেলে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকেও বাপের কাছে পাঠিয়ে দেব।’ যদিও এদিন ভীম নামের সেই যুবক গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে। ভীমের বক্তব্য, ‘এ সব অভিযোগ ভুয়ো। আমার সঙ্গে তপন কান্দুর ছেলের দেখা হয়নি। ঝালদা শহরে তো অনেক জায়গায় সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হোক। তা হলেই বিষয়টি জানা যাবে।’ ঘটনা হচ্ছে এর আগে তপনবাবুর খুনের ঘটনাতেও এই ভীমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন দেবের মা পূর্ণিমা কান্দু। যদিও সে প্রসঙ্গে ভীমের দাবি, ‘অভিযোগ তো অনেকের নামেই হয়েছে। তার তদন্ত চলছে। মিথ্যা অভিযোগ করলেই তো হয় না।’
প্রাণনাশের এই হুমকির পরে দেব ঝালদা থানায় ভীমের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। একই সঙ্গে সে নিরাপত্তার আবেদনও জানিয়েছে। যদিও ভীমকে পুলিশ এখনও এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করেনি বা তাকে আটক করেনি। জানা গিয়েছে ভীম ঝালদা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তপনবাবুর অনুগামীদের দাবি, ভীম এলাকার তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। পুরসভার নির্বাচনের সময় তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারও করেছিলেন। যদিও এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলার সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘ভীম তিওয়ারি তৃণমূলের কোনও পদে নেই। উনি তৃণমূল কর্মী কি না, সেটা স্থানীয় নেতৃত্বই বলতে পারবেন।’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ভীম বিজেপি কর্মী। ঘটনার জেরে দেব জানিয়েছে, ‘আমার বাবার খুনের সঙ্গে ভীম জড়িত। বাবার খুনের পিছনে ভীমের যোগসাজশ রয়েছে। এখনও উনি আমাদের ধারাবাহিকভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।’ এদিন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন জানিয়েছেন, ‘এই ঘটনায় সুনির্দিষ্ট মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’