এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

বিচ্ছিন্নতাবাদের জেরেই উত্তরবঙ্গে বিনিয়োগে আগ্রহ নেই শিল্পপতিদের

কৌশিক দে সরকার: বিজেপির(BJP) সাংসদ থেকে বিধায়কেরা পৃথক রাজ্য গড়ার ডাক দিচ্ছেন। একই দাবি পাহাড়ের একাধিক রাজনৈতিক দলের। পৃথক রাজ্যের দাবি আছে রাজবংশীদেরও। গ্রেটার কোচবিহার গড়ার নামেও পৃথক রাজ্য গঠনের দাবি জানানো আছে। এছাড়াও আছে সশস্ত্র কামতাপুর আন্দোলন। আর এই সব আন্দোলন আর দাবিদাওয়ার জেরেই উত্তরবঙ্গে(North Bengal) শিল্প বা পরিকাঠামো নির্মাণের জন্য বিনিয়োগ করতে চাইছেন না দেশ বা বিদেশের শিল্পপতিরা। সদ্য সদ্য শেষ হয়ে যাওয়া ষষ্ঠ বিশ্ববাংলা বাণিজ্য সম্মেলন থেকে এই সার সত্য খুঁজে পেয়েছে রাজ্যের শিল্প বাণিজ্য দফতরের আধিকারিকেরা। নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা যাচ্ছে। দেশবিদেশের শিল্পপতিরা দক্ষিণবঙ্গের(South Bengal) বুকে একাধিক বিষয়ে যতটা বিনিয়োগের(Investment) ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখিয়েছেন বা বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন তার সিকি ভাগও তাঁরা উত্তরবঙ্গের জন্য দেখাননি। এর পিছনে উঠে আসছে উত্তরবঙ্গকে ঘিরে বিচ্ছিন্নতাবাদের দাবি ও আন্দোলন।

একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলা দখলের ডাক দিয়েছিল। হাঁক পেড়েছিল, ‘আবকে বার ২০০ পার’। যদিও বাংলার মানুষ তাঁদের সেই দৌড় ১০০’র অনেক আগেই থামিয়ে দেয়। মাত্র ৭৭টি আসন পেয়েই দৌড় থেমেছিল বিজেপির। পরবর্তীকালে সেই সংখ্যা আরও কমছে। সেই বিজেপির সাংসদ থেকে বিধায়কেরা বার বার বাংলাকে ভেঙে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য গঠনের দাবিতে সরব হয়েছেন। একই সঙ্গে পাহাড়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড গঠবের দাবিতেও বিজেপি সেখানকার স্থানীয় দলগুলিকে ইন্ধন দিয়ে যাচ্ছে। রাজবংশীদের পৃথক রাজ্য দেওয়ার ভুয়ো স্বপ্ন দেখিয়ে তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ক করায়ত্ত করার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তাতে তাঁরা সফলও হয়। কিন্তু রাজংশীরা আজও পৃথক রাজ্যের উপহার পায়নি বিজেপির তরফে। গ্রেটার কোচবিহার গড়ার দাবিকেও থেকে থেকে উস্কে দেয় বিজেপি। কখনও অনন্ত মহারাজ তো কখনও অন্য কাউকে তুলে ধরে সেই সব আন্দোলনকে হাওয়া দেয় গেরুয়া ব্রিগেড। এছাড়াও দীর্ঘদিনের হিংসাত্মক কামতাপুর জঙ্গি সংগঠনও রয়েছে। তাঁরাও পৃথক কামতাপুর রাজ্য গড়ার দাবি করে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশ নিয়ে।

মজার কথা যারা এই সব পৃথক রাজ্য গড়ার ডাক দিচ্ছেন তাঁরা কেউ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য না কিছু করছেন না কিছু করার ডাক দিচ্ছেন। কার্যত শুধুমাত্র নিজেদের আখের গোছানোর জন্য তাঁরা একের পর এক দাবি দাওয়া করে চলেছেন, বাংলাকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। আর এই সব দেখেই ভবিষ্যতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির কথা ভেবেই উত্তরবঙ্গে বড়সড় বিনিয়োগ করতে রাজি হচ্ছেন না কোনও শিল্পপতি। যারা এই সব বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলন ও কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁদের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার উত্তরবঙ্গকে ক্রমশ ও পর্যায়ক্রমে বঞ্চনা করে চলেছে। যে কোনও প্রকল্পের রূপায়ণ হোক কী উন্নয়ন সবার আগে তা প্রয়োগ করা হয় দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির জন্য। বঞ্চিত থেকে যায় উত্তরবঙ্গের মানুষ ও সেখানকার জেলাগুলি। বাম জমানায় উত্তরবঙ্গ যে বঞ্চিত হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকারের আমলে সেই ছবি আমূল বদলেছে। একই সঙ্গে রাজ্য সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে উত্তরবঙ্গেও বৃহৎ এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করুন শিল্পপতিরা(Industrialists)। তার জন্য পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে শিল্পতালুক তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। বিনিয়োগ টানার জন্য উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে পর্যটন থেকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের দিকেও। কিন্তু অদ্ভূত ভাবে ষষ্ঠ বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আগত শিল্পপতিরা উত্তরবঙ্গকে এড়িয়েই গিয়েছেন তাঁদের বিনিয়োগের জন্য। দক্ষিণবঙ্গের বুকে যখন শিল্পপতিরা ঢেলে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিচ্ছেন, উত্তরবঙ্গ থেকে তাঁরা তখন মুখ ফিরিয়েই থেকেছেন।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের একাধিক শীর্ষ আমলা এই নিয়ে একাধিক শিল্পপতিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সবার দিক থেকে তাঁরা দক্ষিণবঙ্গের বুকেই শিল্পে বিনিয়োগের জন্য প্রস্তাব পেয়েছেন। নাম না করে শিল্পপতিরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সুস্থির পরিবেশ চান যেখানে বিনিয়োগে ঝুঁকি থাকবে না। দক্ষিণবঙ্গে সেই পরিস্থিতি থাকলেও উত্তরবঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদ আন্দোলনের জন্য তা নেই। যে কোনও সময় সেখানে মানুষকে কার্যত ক্ষেপিয়ে তুলে বা ভুল বুঝিয়ে কিংবা কোনও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এলাকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করে তোলা যায়। একুশের বিধানসভার আগে পাহাড় হোক কী সমতল, কোচবিহার হোক কী উত্তর দিনাজপুর, ডুয়ার্স হোক কী মালদা সর্বত্রই একাধিক এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে আর তা শিল্পপতিদের তা নজর এড়িয়ে যায়নি। তাই রাজ্য সরকার চাইলেও তাঁরা এখন কাছা খুলে উত্তরবঙ্গে বড়সড় বিনিয়োগে আগ্রহী নয়। তবে তাঁরা মনে করেন, উত্তরের জেলাগুলিতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) প্রধান্য প্রতিষ্ঠা পেলে সেখানে পরিস্থিতি বদলাবে। তখন তাঁরাও বিনিয়োগের কথা অবশ্যই ভেবে দেখবেন। কার্যত নাম না করেই তাঁরা উত্তরবঙ্গের অস্থিরতার জন্য বিজেপিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। 

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

গয়েশপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠিচার্জ, আহত একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মী

‘তাঁর চরিত্র মোটেই সাধুসন্ত সুলভ নয়’, মমতার সুরে কার্তিক সুর অধীরেরও

হাওড়ার ডোমজুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠিচার্জ, ষষ্ঠী তলায় বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ

‘রাজ্য আছে, পালের গোদা হারিয়ে গিয়েছে’, মমতার নিশানায় রাজ্যপাল

বনগাঁতে ঝড়ে লন্ডভন্ড ভোট গ্রহণ কেন্দ্র, ব্যারাকপুরে লোডশেডিং- এর মধ্যে চলছে ভোটগ্রহণ পর্ব

বুথের ভেতরে ঘুটঘুটে অন্ধকার! জনতাদের বুঝেশুনে ভোট দেওয়ার অনুরোধ রচনার

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর