নিজস্ব প্রতিনিধি: বিরোধিরা চেয়েছিলেন NIA বা CBI তদন্ত। সেই দাবি নিয়ে আপত্তি তোলেননি মুখ্যমন্ত্রীও। যদিও তিনি এই ঘটনায় CID তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। দেখা গেল সেই CID’র হাত ধরেই বিস্ফোরণের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে এল সাফল্য। ওড়িশায়(Orrisa) তাঁদের হাতে ধরা পড়লেন এগরার(Egra) সাহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল(Khadikul) গ্রামের ঘটে যাওয়া বাজি কারখানার বিস্ফোরণের(Blast) মূল মাথা তথা কারখানার মালিক ভানু বাগ(Bhanu Bag)। এলাকার মানুষের দাবি, টাকা আর ক্ষমতার জোরে তিনি কার্যত হয়ে উঠেছিলেন খাদিকুল গ্রামের ‘বাঘ’। তার মুখের ওপর কেউ কথা বলতে পারত না। পুলিশ তার পায়ের নীচে থাকত। তার জেরেই বছরের পর বছর অবৈধ ভাবে এই বাজির ব্যবসা করে চলেছিলেন তিনি। অবশেষে নিজের ছেলে ও ভাইপো সমেত ভানু পড়লেন ধরা রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা CID’র হাতে। ওড়িশার কটকের এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন বিস্ফোরণের দগ্ধ ভানু। আর এই কারণেই CID’র হাতে ধরা পড়লে এখনই তাকে নিয়ে আসা যাচ্ছে না রাজ্যে।
আরও পড়ুন এগরা বিস্ফোরণ : রাজ্যের তদন্তেই ভরসা রাখলেন রাজ্যপাল
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার বিস্ফোরণের পরে পরেই পরই অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় বাইকে চেপে চম্পট দিয়েছিলেন ভানু। সেই খবর কানে যায় CID’র। প্রথম থেকেই তাঁদের নজর ছিল ওড়িশায় বাংলা ঘেঁষা শহরগুলিতে থাকা হাসপাতালগুলিতে। সেই সূত্রেই তাঁরা জানতে পারেন কটকের এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দগ্ধ ভানু। ব্যবসা সূত্রে ওড়িশায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল ভানুর। ছিল পরিচিতিও। তাই হাসপাতালে ভর্তি হতে বেগ পেতে হবে না। সেটা জেনেই যে ভানু ওই রাজ্যেই যাবেন সেটা ধরেই নিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্রেই তাঁদের কাছে খবর আসে দগ্ধ হয়ে কটকের এক হাসপাতালে ভর্তি আআছেন ভানু। সঙ্গে আছে ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ ও ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগ। এরপরে দ্রুত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে ভানুর ছেলে ও ভাইপোকে গ্রেফতার করেছে CID। ভানুকে করা হয়েছে নজরবন্দি। তার হাত, মাথা, পা, মুখ পুড়ে গিয়েছে। তাই এখনই তাকে বাংলায় আনা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন সমস্যার সমাধানে কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভানুর ভাই ও ইন্দ্রজিতের বাবা বাদল বাগের মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। সেই সঙ্গে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ ৪ জনের অবস্থা রীতিমত আশঙ্কাজনক বলেই তথ্য সামনে এসেছে। এখনও পর্যন্ত এই বিস্ফোরণের ঘটনায় সরকারি ভাবে ৯ জনের মৃত্যুর খবর সামনে এলেও তা বাড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। খাদিকুল জুড়ে একদিকে স্বজনহারাদের হাহাকার। সেই সঙ্গে প্রবল রাগ-ক্ষোভ। মূল ক্ষোভ ভানুর বিরুদ্ধেই। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে বিস্তর ক্ষোভ। স্থানীয়দের দাবি, ভানু কার্যত তার দাপটের জোরে হয়ে উঠেছিলেন এলাকার ‘বাঘ’। কেউ আবার জোর করে জমি দখল করে বাজি কারখানা তৈরির অভিযোগও তুলেছেন।