নিজস্ব প্রতিনিধি: মানুষ দিয়েছে বেড়া, মানুষ বসিয়েছে দেশে দেশে কাঁটাতার। সীমান্তের সেই বিধিনিষেধের কাছে রাষ্ট্রের নাগরিকরা দায়বদ্ধ থাকলেও, সীমান্তের বিধিনিষেধ পরোয়া করে না বুনো হাতির দল। ভূটান-নেপাল-ভারত তাদের অবাধ যাতায়াত।
বৃহস্পতিবার সকালে সীমান্ত পেরিয়ে প্রায় ৪০টি হাতির একটি দল সন্তান-সহ ঢুকে পড়ে। গজলডোবার লোকালয়ে তাদেরকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। হাতির দলকে কাছাকাছি দেখে খুশি পর্যটকরা। মোবাইলে ছবি বন্দি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। উত্তরবঙ্গে হাতির ১৫ টি করিডর আছে, যেখান দিয়ে হাতির দল ভারত, ভূটান কিংবা নেপালে অবাধ যাতায়াত করে। এই করিডর গুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ করিডর হল আপাল চাঁদ মহানন্দা করিডর। যে করিডর দিয়ে হাতির দল কখনও ভূটান আবার কখনও নেপালের দিকে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রহ্লাদ সরকার জানান, ‘প্রতিবছর এই সময় ভূটান থেকে আসে বুনো হাতির দল। এরপর এরা তিস্তার গজল ডোবা পার করে নদীর পার ধরে নকশাল বাড়ির দিয়ে নেপালের দিকে চলে যায়। সেখান থেকে যায় নেপালে। আবার ফিরেও আসে। কিন্তু এই বছর গতকাল থেকে আটকে আছে হোগলা বনে।’ হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে যাওয়ায় আতঙ্কও রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত বৈরাগী বলেন, ‘গতকাল হাতিগুলিকে জঙ্গলের দিকে দেখেছিলাম। আজকে তিস্তা নদী পার করে এপারে এসেছে। যদি আবার গ্রামে ঢুকে যায় তবে মুশকিল হবে। তাই আতঙ্কে রয়েছি আমরা।’
হাতির পাল নিয়ে পরিবেশ কর্মী শ্যামা প্রসাদ পান্ডে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে যেই ১৫ টি হাতির করিডর রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করিডর হল এই আপাল চাঁদ মহানন্দা করিডর। যেই করিডরে এই মুহূর্তে হাতির দলটি রয়েছে। এই করিডর ধরে হাতি তরাই ও ডুয়ার্সে যাতায়াত করে। হাতি সাধারণত রাতে যাতায়াত করে। ভোর হবার আগেই তারা জঙ্গলে ফিরে যায়। কিন্তু এখন প্রায় সময় দেখা যাচ্ছে হাতির দল দিনের বেলাতেও এই করিডর গুলিতে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারন হাতির যাতায়াতের পথ বিভিন্ন ভাবে বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে। এর ফলে মানুষ-হাতি সংঘাত বাড়ছে।’