নিজস্ব প্রতিনিধি: বৈষ্ণব রাস উৎসব হয় কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে। রাস (RASH) মূলত বৈষ্ণবদের উৎসব। শাক্ত রাসের উৎসব হয় কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতেই। বৈষ্ণব রাস ও শাক্ত রাস মানেই নদিয়া। বৈষ্ণব এবং শাক্ত মিলে উৎসবের নাম শুধুই ‘রাস’।
বৈষ্ণব রাস মানে রাধা ও কৃষ্ণ ব্রজলীলা। শাক্ত রাস মানে শক্তির আরাধনা। দেবী কালিকা, দুর্গা, জগদ্ধাত্রী প্রমুখ অর্থাৎ শক্তির দেবীর আরাধনা করা হয় এই উৎসবে। আগে পটে পুজো হতো বলে এই পূর্ণিমাকে পট পূর্ণিমাও বলা হয়। শোনা যায়, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সময়ে প্রবর্তিত কালী মূর্তি এই সময়েই পুজো হতো।
আগে বৈষ্ণব ও শাক্তদের মধ্যে রাস নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও এখন এই উৎসব মিলনের। শাল কাঠের ‘পাটা’ পুজো করে তৈরি হয় প্রতিমা তৈরির কাজ। নবদ্বীপের রাসের খ্যাতি দিকে দিকে। এই উৎসব এখানের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় আচার। এত নাম ও ‘শাক্ত- বৈষ্ণব’ মিলন কিন্তু রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের জন্যই। শাক্ত এবং বৈষ্ণবদের বিরোধ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন এই রাজা। বৈষ্ণব এবং শাক্তদের রাজা নির্দেশ দিয়েছিলেন কার্তিক মাসের পূর্ণিমা তিথির সময় যারা যেই দেব-দেবী’তে বিশ্বাসী, তাঁরা যেন সেই দেব-দেবীর আরাধনা করবেন। ফলে একই জায়গায় দেখা গেল কৃষ্ণ ও কালীর উপাসনা। ভক্তিতে আর বিরোধ থাকল না।
বিজয়া দশমী বা লক্ষ্মী পুজো কিংবা কালীপুজোর দিনে পাটাপুজো করা হয়। ফাটানো হয় পটকা। লক্ষ্মীপুজোর সময়ে কোথাও শব্দবাজি’র প্রচলন না থাকলেও এখানে আছে। পাটা পুজোর পরে প্রতিমা তৈরির কাজ চলে। এরপরে রাসের দিন শুরু হয় আরাধনা। আর দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয় তার পরের দিন প্রতিপদে। মূলত, বিগ্রহ বা মণ্ডপের নিচে থাকে চাকায় ঠেলা গাড়ি। বিসর্জনের দিন এই গাড়িতে করেই হয় রাস শোভাযাত্রা। নদিয়ায় কৃষ্ণ আর কালীর আরাধনায় ভক্তরা মিলবেন না ই বা কেন? এই এলাকা যে কৃষ্ণকালীর।
আরও পড়ুন: https://www.eimuhurte.com/bibidho/krishnakali-story/