24ºc, Haze
Saturday, 1st April, 2023 7:24 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: ১৪৪টি স্কুলের জন্য রান্নাঘরের ভাঁড়ার মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয় ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। কিন্তু এখন অভিযোগ উঠেছে কাজ না করিয়েই সেই টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে ঠিকাদারের হাতে। তছরুপের পরিমাণ ১৩,৭১,৯০৫ টাকা। আর সব থেকে চমকে দেওয়ার খবর এটাই যে এই দুর্নীতি(Corruption) বা তছরুপের ঘটনায় শুধু যে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির নাম জড়িয়েছে তাই নয়, নাম জড়িয়েছে এলাকার বিডিও’রও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনও স্কুলে কোনও কাজ না করিয়েই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি, বিডিও আর ঠিকাদার মিলে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা হজম করে ফেলেছেন। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhawan) জেলার উত্তর সদর মহকুমার গলসি-১(Galsi-1) ব্লকে। ঘটনার জেরে এলাকার বিশিষ্টজনেরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়ে এই দুর্নীতির তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন।
ঠিক কী হয়েছে? পূর্ব বর্ধমান জেলার ২০২১-’২২ আর্থিক বছরে এমডিএম বা মিড-ডে মিল প্রকল্পে ২,১৯০টি প্রাথমিক এবং উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের রান্নাঘরের ভাঁড়ার মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয় দু’কোটি ১৯ লক্ষ টাকা। সেখানে শুধু গলসি ১ নম্বর ব্লকের ১৪৪টি স্কুলের জন্য বরাদ্দ হয় ১৪ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা। অভিযোগ, অনলাইন টেন্ডার না ডেকেই বরাত দেওয়া হয় গলসি-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারি সভাপতি ঘনিষ্ঠ ঠিকাদার অভিজিৎ কোনারকে। কিন্তু তিনি কোনও কাজই করেননি। অথচ ১৩,৭১,৯০৫ টাকা পেয়ে গিয়েছেন তিনি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কাজ না করেই প্রকল্পের লক্ষ লক্ষ টাকা কী ভাবে পেলেন ঠিকাদার। ঘটনাটি নিয়ে বিডিও(BDO)-র বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন খোদ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফজিলা বেগম। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমাকে না জানিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ আছে ৫ লক্ষ টাকার বেশি কাজ হলেই তা টেন্ডার ডেকে করাতে হবে। এখানে তো টেন্ডার ডাকাই হয়নি। আমার হাতে ১৪৪টি স্কুলের একটা তালিকা এসেছে। তার মধ্যে কয়েকটি স্কুলে তদন্ত করতে গিয়েছিলাম আমি নিজে। কিন্তু গিয়ে দেখি সেখানে কোনও কাজই হয়নি। অথচ, টাকা খরচ হয়েছে। তাই বাকি স্কুলগুলির কাজ ঠিকঠাক হয়েছে কি না তার তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হচ্ছি।’
ঘটনার জেরে সরব হয়েছেন গলসি-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেখ রোকেয়াও। তিনি জানিয়েছেন, ‘ফজিলা আমায় অনেকটাই জানিয়েছে। বেশ কিছু স্কুলের তরফে আমি নিজেও অভিযোগ পেয়েছি। এ নিয়ে বিডিও-র কাছে কিছু জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে যাচ্ছেন।’ যদিও বিডিও জানিয়েছেন, ‘স্কুল ছুটি থাকার কারণে কাজ বন্ধ ছিল। আগামী এক মাসের মধ্যে সমস্ত কাজ হয়ে যাবে।’ যদিও প্রশ্ন উঠছে কাজ না করেও কী ভাবে একজন ঠিকাদার টাকা পেয়ে গেলেন? এলাকার অনান্য ঠিকাদারদের দাবি, শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এক ঠিকাদারকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ, তাঁদের বকেয়া টাকা কাজের তিন বছর পরেও তাঁরা হাতে পাচ্ছেন না।