নিজস্ব প্রতিনিধি: কোভিডের আতঙ্ক এখন অনেকটাই কেটে গিয়েছে বাংলার বুক থেকে। কিন্তু এরই মধ্যে পশ্চিম বর্ধমান(Paschim Burdhwan) জেলার দুর্গাপুর-আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে মাঙ্কিপক্সের আতঙ্ক। যদিও সরকারি ভাবে মানা হচ্ছে না যে এলাকায় মাঙ্কিপক্স(Monkey Pox) ছড়িয়ে পড়েছে। তবে সবাইকে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর(Durgapur) ও রানীগঞ্জের(Ranigunge) কিছু এলাকায় শিশুদের মধ্যে একধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে যার সঙ্গে মাঙ্কিপক্সের বেশ মিল রয়েছে। প্রথমে ওই সব শিশুদের হাতে ও পায়ে লাল রঙের ছোট ছোট র্যাশ বেড়িয়েছিল। তারপর সেগুলি ধীরে ধীরে ফোস্কার মতো চেহারা নেয়। সেই সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে দেহের অনান্য ভাগেও। পাশপাশি জ্বর ও মুখে ঘাও হয়। এই সব দেখেই ওই সব শিশুদের অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। সেই জায়গা থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, এই রোগ মাঙ্কিপক্স নয়। নেহাতই কক্সসাকি ভাইরাস ঘটিত হ্যান্ড ফুট মাউথ রোগ(Hand Foor Mouth Disease)।
বিষয়টি সামনে আসার পরেই অবশ্য জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে দুর্গাপুর-আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সব সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুর্গাপুর ও আসানসোল পুরনিগমের স্বাস্থ্যবিভাগও এই বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখছে। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের আধিকারিকদেরও নজরে এনেছেন জেলা স্বাস্থ্যদফতরের আধিকারিকরা। উপদ্রুত এলাকায় সার্ভে করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিওH জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস জানিয়েছেন, হ্যান্ড ফুট মাউথ রোগে বেশ কিছু শিশু আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কোনও কারণ নেই। এই রোগ নিজে থেকেই সেরে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। স্বাস্থ্যদফতরের পক্ষ থেকে পুরো বিষয়টি নজর রাখা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় এলাকাগুলিতে সার্ভেও করা হচ্ছে। আপাতত্র দুর্গাপুর ও রানীগঞ্জেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। তবে জেলাজুড়েই নজরদারি রাখা হচ্ছে যে অন্য কোথাও তা ছড়িয়ে পড়েছে কিনা। জেলার প্রত্যেকটি ব্লকের বিএমওএইচ ও হাসপাতাল সুপারদের এই নিয়ে সতর্কও করে দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের দাবি, কক্সসাকি ভাইরাস ঘটিত হ্যান্ড ফুট মাউথ রোগ হলে শিশুদের মুখে ঘায়ের পাশাপাশি হাত ও পায়ে লাল ছোট ছোট র্যাশ দেখা যায়। এক, দু’দিন অল্প জ্বর থাকার পর এই র্যাশ বের হয়। তবে এর সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া ঘটিত কোনও সংক্রমণ যুক্ত হলে তা ফোস্কার আকার নেয়। তখনই অনেকে এই রোগকে মাঙ্কিপক্স বলে সন্দেহ করে বসে। কিন্তু এই রোগ মাঙ্কিপক্সের মতো বিপজ্জনক নয়। তবে অবশ্যই ছোঁয়াচে। ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সরাসরি সংযোগ হলে এমনকী নিঃশ্বাস, প্রশ্বাসের মধ্যেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই শিশুদের পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এই ভাইরাসঘটিত রোগ হলে শিশুকে আলাদা রাখা ভালো। কয়েকদিনের মধ্যেই রোগ নিরাময় হয়ে যায় নিজে থেকেই।