নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের আরও প্রায় ৩ হাজার সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চালু হতে চলেছে টেলিমেডিসিন পরিষেবা। আরও পাঁচ মাসের মধ্যে এইসব সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র ধাপে ধাপে টেলিমেডিসিনের আওতায় চলে আসবে। শুক্রবার এক নির্দেশনামায় এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাক্তার অজয় চক্রবর্তী। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রথম ধাপে মার্চে এবং দ্বিতীয় ধাপে জুনের মধ্যে পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হবে। বর্তমানে রাজ্যের ২৩১৩টি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪৬৩ জন ডাক্তার দ্বারা পরিচালিত হয়। মার্চের মধ্যে ১৭২৮টি এবং জুনের মধ্যে আরও ১২১৬টি সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনলাইনে ডাক্তার দেখানোর কাজ চলবে। সেইমতো দরকার দ্বিগুণের বেশি চিকিৎসক। সেইটাই এখন চিন্তার বিষয় স্বাস্থ্য দফতরের।
অন্যদিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরেই এবার গড়ে উঠতে চলেছে কর্পোরেট ধাঁচের উৎকর্ষ চিকিৎসা কেন্দ্র। সেখানে একই ছাদের নীচে মিলবে সব রকম চিকিৎসার পরিষেবা। বছর দুয়েকের মধ্যে এমনই ন’তলা একটি হাসপাতাল গড়ে উঠতে চলেছে এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, নতুন ওই হাসপাতালে কর্পোরেট ধাঁচে পরিষেবা মিললেও সেই হাসপাতালের নিয়ন্ত্রণ থাকবে রাজ্য সরকারের হাতেই। যে সব রোগী খরচ করে ভালো চিকিৎসা পরিষেবা পেতে চান, তাঁদের জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার এই হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিয়েছে ও হাসপাতাল নির্মাণের জন্য প্রাথমিক ভাবে ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পূর্ত দফতর দ্রুত দরপত্র ডেকে এই হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করে দিতে চাইছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের দাবি, বাংলার সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি ধাঁচের সুবিধা পেতে চান অনেক রোগীই। তাঁদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে পে-কেবিনও রয়েছে। খাস এসএসকেএম হাসপাতালেই রয়েছে উডর্বান ব্লক। সেখানে খরচের বিনিময়ে বিলাসবহুল কেবিনে চিকিৎসা পান রোগীরা। তবে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অস্ত্রোপচারের জন্য পিজি-র বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে বা বিভাগে যেতে হয় তাঁদের। নতুন প্রকল্পটির আপাতত নামকরণ হয়েছে ‘প্রাইভেট কেবিন বিল্ডিং’। সেখানে কিন্তু স্বয়ংসম্পূর্ণ পরিষেবার ব্যবস্থা থাকবে সেখানে। ফলে ওই নতুন হাসপাতালে যারা ভর্তি হবেন তাঁদের আর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অস্ত্রোপচারের জন্য পিজি-র বিভিন্ন বিল্ডিংয়ে বা বিভাগে যেতে হবে না। এক ছাদের নীচেই মিলবে যাবতীয় সুবিধা। এসএসকেএমের চত্বরে থাকা ১১ কাঠা জমিতে গড়ে উঠবে ন’তলা বিশিষ্ট ওই নতুন হাসপাতাল।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী একতলায় থাকবে অ্যাডমিশন ও ডিসচার্জ ডেস্ক এবং চিকিৎসকদের বহির্বিভাগের কেবিন। দোতলায় থাকবে অপারেশন থিয়েটার, প্যাথলজি, রেডিয়োলজি পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং আট শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট। তিন থেকে আটতলার প্রতিটি তলে ১৮-২০টি করে এক শয্যার কেবিন থাকবে। ন’তলায় থাকবে ৮টি ভিআইপি কেবিন। অন্য একটি তলে মর্গ-সহ বিভিন্ন কাজের ব্যবস্থা থাকবে। এসএসকেএমের চিকিৎসকেরাও ডিউটির পরে বা ছুটির দিন সেখানকার বহির্বিভাগে রোগী দেখতে পারবেন। তাঁকে ফি দেবেন রোগী। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, এখানে নিজের খরচে রোগীরা পরিষেবা পেলেও তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে যাবে না। কার্যত তাঁদের সাধ্যের মধ্যেই সব খরচা রাখা হবে।