28ºc, Haze
Tuesday, 28th March, 2023 10:46 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাম জমানার শেষ দিকে ২০০০ সাল নাগাদ রাজ্য সরকার বাংলায় শিশুশিক্ষা কেন্দ্র(Shishu Sikha Kendra) চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ঠিক হয়েছিল একটি প্রাথমিকস্কুলের এক কিলোমিটারের মধ্যে যদি আর কোনও প্রাথমিক স্কুল না থাকে তাহলে সেখানে শিশুশিক্ষাকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। সেই নীতি মেনে হাওড়া জেলায়(Howrah) ২৫৬ টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি করা হয়। এখানে পঠন পাঠনের পদ্ধতি প্রাথমিক স্কুলের(Primary School) মতোই। এখানেও মিড ডে মিল(Mid Day Meal) দেওয়া হয়। এগুলি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হলেই এই সব শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষকতার সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতি কেন্দ্রে দুই থেকে চার জন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা হতো। বর্তমানে জেলার শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পড়ে প্রায় ১৪ হাজার পড়ুয়া। কিন্তু এর মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রে এবার তালা ঝোলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাওড়া জেলা প্রশাসন(Howrah District Adminstration)। কেননা ওই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলিতে না আছে পর্যাপ্ত সংখ্যার পড়ুয়া, না আছে শিক্ষক-শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন রাজ্যের হলফনামায় ত্রুটি, সুপ্রিমে পিছোল DA মামলা
জানা গিয়েছে, বছর দু’য়েক আগে পর্যন্ত পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এই সব কেন্দ্রে শিক্ষক নিয়োগ করত। বছর দু’য়েক আগে শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলি পঞ্চায়েতের হাত থেকে চলে যায় শিক্ষা দফতরের হাতে। কিন্তু তারপরও এই সব শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব শিক্ষা দফতর নেয়নি বলে অভিযোগ। কেন্দ্রগুলিতে কোনও শিক্ষকও নিয়োগ করা হয়নি। যে ১৬টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করার কথাবার্তা চলছে সেখানে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক বা শিক্ষিকা নেই। আর শিক্ষক-শিক্ষিকা না থাকায় সেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা তলানিতে গিয়ে ঠেকে। তার জেরে দেখা যাচ্ছে কোথাও মাত্র দু’জন পড়ুয়াকে নিয়ে চলছে পঠন-পাঠন আবার কোথাও পড়ুয়া থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকা কেউ নেই। এর জেরেই হাওড়া জেলা প্রশাসন জেলার মোট ১৬টি শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধের প্রস্তাব রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের কাছে পাঠিয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত এলেই তা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন লালন মৃত্যুর জেরে সাসপেন্ড ২ সিবিআই আধিকারিক সহ ৪
এই বিষয়ে জেলা পরিষদের শিক্ষা সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ শ্রীধর মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘নিয়মানুযায়ী কোনও শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে পড়ুয়ার সংখ্যা কম হলেই সেটা বন্ধ করতে হবে। পড়ুয়া পর্যাপ্ত থাকায় এর আগে কখনও কোনও শিশু শিক্ষাকেন্দ্র বন্ধের প্রয়োজন হয়নি। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ার জন্য এই প্রথম একসঙ্গে এতগুলি কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। যে ১৬টি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই সব কেন্দ্রের পড়ুয়াদের কাছের প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হবে। এই সব কেন্দ্রের শিক্ষকদের অন্য শিশু শিক্ষাকেন্দ্রে বদলি করে দেওয়া হবে।’ তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের থেকে রাজ্য শিক্ষা দফতরতের হাতে এই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রগুলি গেলেও সেখানে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা জটিলতা আছে। সেই কারণেই ফের পঞ্চায়েতের হাতে কেন্দ্রগুলিকে ফিরিয়ে দিতে চায় রাজ্য শিক্ষা দফতর।