নিজস্ব প্রতিনিধি: হাওড়া পুরনিগমে(Howrah Municipal Corporation) ভোট কবে হবে কেউ জানে না। কিন্তু সেই ভোটের অপেক্ষায় আর বসে থাকতেও চায় না রাজ্য সরকার(State Government)। গঙ্গার পশ্চিম পাড়ের এই শহরে নাগরিকদের আরও ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে এবার উদ্যোগী হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। হাওড়া শহরের বাসিন্দাদের কাছে আরও বেশি করে সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে এবার পঞ্চায়েত এলাকার মতোই শহর এলাকাতেও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র(Susathya Kendra) তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। আপাতত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে হাওড়া শহরে ১১টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করা হবে। প্রতি ১৫ হাজার জনসংখ্যার জন্য একটি করে এই নতুন সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি হবে। এর জন্য জায়গা দেখার কাজ চলছে। এতদিন হাওড়া পুরনিগম এলাকায় মূলত প্রাথমিক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হত। কিন্তু শহরাঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও। এর ফলে সরকারি হাসপাতালগুলিতে ক্রমশ রোগীর চাপ বাড়ছে। সেই চাপ কমাতে এ বার রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো হাওড়াতেও সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য হাওড়া পুরনিগমকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
এই বিষয়ে হাওড়া পুরনিগমের প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘সরকারি হাসপাতাল এবং পুরনিগমের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মাঝামাঝি জায়গায় ওই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করা হবে। মূলত রোগীর চাপ কমাতেই তৈরি করা হচ্ছে এগুলি। এখানে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, ফার্মাসিস্ট থাকবেন, দেওয়া হবে কিছু ওষুধও। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসার জন্য রোগীরা আসতে পারবেন। এই কেন্দ্র তৈরির জন্য বর্তমানে জায়গা দেখার কাজ চলছে। পুরনিগমের নিজস্ব জায়গা ও হাওড়া উন্নয়ন নিগমের জায়গায় এই কেন্দ্রগুলি তৈরির ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। তবে এর পাশাপাশি কোনও ক্লাব বা বাড়ি ভাড়ায় দিতে চাইলে পুরনিগম তাঁদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাড়া দেবে। সেই রাস্তাও খোলা রাখা হচ্ছে। এই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে শুধু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়াই নয়, পরবর্তী কালে সেখানে বিশেষ চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।’
আবার হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির জন্য পুরসভাকে জায়গা দিতে বলা হয়েছে। ধাপে ধাপে এই কেন্দ্রগুলি তৈরি হবে। এতে মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছনো আরও সহজ হবে। এ ছাড়াও হাওড়া পুরনিগমের ১৯টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে যাতে আরও ভাল ভাবে পরিষেবা দেওয়া যায়, সে জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে ওষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত যেমন নেওয়া হয়েছে তেমনি সপ্তাহে এক দিন করে ওই সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজনও করা হবে। সেখানে পুর স্বাস্থ্যকর্মীরা বিনামূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। থাকবে থ্যালাসেমিয়ার মতো পরীক্ষার ব্যবস্থাও।’