-273ºc,
Saturday, 3rd June, 2023 2:54 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয়েছে একাধিকবার। কপালের জোরে গুরুতর জখম হয়েও বেঁচে গিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল না গরু পাচার বা কয়ালা পাচারের অভিযোগও। তাই তাঁকে নিয়ে টানাটানি করতে দেখা যায়নি সিবিআই বা ইডিকে। কিন্তু তাঁর বাড়িতে হানা দিয়ে আয়কর দফতরের আধিকারিকেরা(IT Raid) কিনা উদ্ধার করল নগদ ১৫ কোটি টাকা যার কোনও হিসাব নেই। আয়কর দফতরের পরিভাষায় যাকে বলে কিনা ‘Unaccounted Property’। তিনি একজন শিল্পপতি(Industrialist)। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী(Former Minister)। বর্তমানে বিধায়ক ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অতন্ত আস্থাভাজন। সেই জাকির হোসেনের(Jakir Hossain) বাড়ি ও কারখানা থেকেই কিনা আয়কর দফতর উদ্ধার করেছে ১৫ কোটি টাকা। সেই টাকার উৎস কী তা এখনও জানা যায়নি বলেই আয়কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন যোশীমঠের মতই পরিণতি হতে পারে সল্টলেক-নিউটাউনের
মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলার জঙ্গিপুর(Jangipur) মহকুমার সুতিতে(Suti) বাড়ি জাকির হোসেনের। দশম শ্রেনী পাশ এই ব্যবসায়ী নিজেকে শিল্পপতি হিসাবে তুলে ধরেছেন গত কয়েক দশমের মধ্যেই। মূলত বিড়ি শিল্পের ওপর ভর দিয়েই তাঁর উড়ান। তারপর একে একে গড়ে তুলেছেন জুটমিল, কাপড়ের ব্যবসা, গাড়ির ব্যবসা। সেই জাকিরই এখন জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে নেই কোনও অপ্রীতিকর অভিযোগ। কার্যত গোতা জঙ্গিপুর মহকুমাজুড়েই তাঁর প্রভাব। তাঁর দাপটে এলাকায় কোনঠাসা হয়ে গিয়েছে গরু পাচার চক্র সহ একাধিক অসামাজিক কাজকর্ম। তার জেরেই তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হয় ২০২১ সালে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের সময়। যদিও তাতেও তাঁর জয়যাত্রা ঠেকানো যায়নি। এহেন জাকিরের বাড়িতেই কিনা আয়কর দফতরের হানাদারি। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ সিআরপিএফ জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে জাকিরের বাড়ি ঘিরে ধরে অভিযান শুরু করেন। শুধু তাঁর বাড়িই নয়, হানা দেওয়া হয় তাঁর একাধিক বিড়ি কারখানা, জুট মিল ও গুদামে। সব জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দিয়ে এলাকা ঘিরে তল্লাশি চালানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে আয়কর দফতর সূত্রে জানা যায় কারখানা থেকে নগদ ১১ কোটি টাকা ও বাড়ি থেকে নগদ ৪ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে যার উৎস সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি জাকির হোসেন। কেন এত বিপুল পরিমাণ টাকা এই দুই জায়গায় রাখা হয়েছিল সেটাই প্রশ্ন হিসাবে উঠে এসেছে। এই ১৫ কোটি টাকাই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে আয়কর দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন পৌষ সংক্রান্তিতে কম থাকবে শীত, পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের
এই ঘটনার জেরে এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের তরফে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে এই হানাদারি নিয়ে প্রশ্নও উঠছে। কেননা এই ১৫ কোটি টাকা ১ জায়গা থেকে উদ্ধার হয়নি। একাধিক কারখানা, অফিস, গুদাম ও বাড়ি থেকে মোট এই টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। আয়কর দফতরের দাবি এই টাকা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। যদিও প্রশ্ন কারখানা, অফিস, গুদাম চালাতে নিত্যদিন নগদ টাকা লাগে। সেই সূত্রে যদি কেউ কারখানা, অফিস ও গুদামে টাকা রাখে তাহলে তাতে অন্যায় হবে কেন? কিন্তু আয়কর দফতরের আধিকারিকদের দাবি, সেই টাকা থাকে ঠিকই, কিন্তু সেই টাকারও উৎস থাকে। হিসাব থেকে। এই টাকা কার, কেন তা রাখ আছিল তার কোনও হিসাব কেউ দিতে পারেননি। এই টাকা গরু পাচারের টাকাও হতে পারে, কয়লা পাচারের টাকাও হতে পারে বা নিয়োগ দুর্নীতির টাকাও হতে পারে। কেন এই টাকা লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সেটাই এখন খতিয়ে দেখা হবে। এই টাকার সঙ্গে হাওয়ালার কোনও যোগাযোগ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।