নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁর গ্রামের বাড়িতেই দুর্গাপুজো(Durga Puja) হয়। প্রতিবছর পুজোর দিনগুলি সেখানেই কাটাতেন। রাতের দিকে সিউড়ি, বোলপুর(Bolpur), রামপুরহাটের কয়েকটি বাছাই মণ্ডপে মেয়েকে নিয়ে ঢুঁ মারতেন সময় পেলে। কিন্তু এখন তিনি আছেন জেলে, আর মেয়ের দিন কাটছে বোলপুরের বাড়িতে মনমরা হয়ে। তারপর তো ইডি আর সিবিআইয়ের তলব আছে, জেরা আছে, তল্লাশি আছে, আদালতে হাজিরা দেওয়ার গপ্পোও আছে। তাই পুজো যে এবারে একদম ভাল কাটবে না সেটাও বাপ-বেটি বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছে। তাই দুইজনই স্বীকার করুক বা না করুক কার্যত বেজায় মনমরা হয়েই দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু বাপের বেজার মন কাটাতে এবার বিশেষ নজর দিচ্ছে সংশোধনাগার। পুজোর ৪দিন সেখানে আয়োজন হচ্ছে রীতিমত ভুরিভোজের। কেননা সেখানেই তো রয়েছে ভিভিআইপি বাপ, বাংলার কেষ্ট।
আসানসোল কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারেই(Asansol Central Correctional Home) এখন দিন কাটছে কেষ্টবাবাজির, থুড়ি বীরভূমের(Birbhum) হাড় কাঁপানো নেতা অনুব্রত মণ্ডলের(Anubrata Mondol)। জেলে গিয়েও তিনি এখনও রয়ে গিয়েছেন বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি পদে। এহেন কেষ্ট’র দাপট যে এখনও রয়েছে সেটা লালমাটির জেলায় পা রাখলেই চোখে পড়বে। কেননা সেখানে হাজার হাজার অনুব্রত লড়ে চলেছেন কেন্দ্র সরকারের এজেন্সিরাজের বিরুদ্ধে। তাই বীরভূমের বুকে দল নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই বাংলার শাসক শিবিরের। বরঞ্চ তাঁদের অনেক বেশি চিন্তা কেষ্ট’র শরীর আর মন নিয়ে। যাই হোক, সেই কেষ্ট যাতে পুজোর ৪দিন একটু ভাল-মন্দ খেতে পারেন তার জন্য আসানসোল সংশোধানাগার কর্তৃপক্ষ একদম ‘দিল সে’ উদ্যোগ নিয়ে নিয়েছে। সেখানে সপ্তমী থেকে দশমী থাকছে এলাহি খাওয়াদাওয়ার আয়োজন। দেশি মুরগির ঝোল থেকে দেশি কাতলার কালিয়া, ফ্রায়েড রাইস থেকে বাসন্তী পোলাও, লুচি থেকে পরোটা, ফুলকপির রোস্ট থেকে বাঁধাকপির শাহী হালুয়া, আর থাকছে নানান রকমের মিষ্টি, সঙ্গে মটন বিরিয়ানি। পুজোর চারদিনই বন্দিদের কনুই ডুবিয়ে কেষ্ট’র সেবায় মন দেবে আসানসোল সংশোধনগার কর্তৃপক্ষ। তবে সেখানকার সব বন্দিরাই এই ভোজের শরিক হবেন বইকি।
অনুব্রত মণ্ডলের শরীর বিশেষ ভাল নেই। তাই চিকিৎসকেরা তাঁকে ‘ডায়েট চার্ট’ ধরিয়ে দিয়েছেন, যা মেনে এখন রোজ তাঁকে খাওয়াদাওয়া করতে হচ্ছে। নিন্দুকদের দাবি, জেলের ভাত খেয়ে কেষ্টবাবা নাকি কিঞ্চিৎ মেদও ঝরিয়েছেন, তাই তাঁর লুকে নাকি গ্ল্যামার আরও বেড়ে গিয়েছে। তা সে যাই হোক জেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তমীর মেনুতে কেষ্ট’র পাতে দেশি মুরগির ঝোল মোটামুটি পাকা। রাতে ফ্রায়েড রাইস। অষ্টমির সকালে লুচি, রাতে পরোটা। নবমীর সকালে মাছের কালিয়া ও দিশি মুরগীর ঝোল। রাতে মটন বিরিয়ানি। দশমীতেই থাকছে ফিস কালিয়া উইথ বসন্তী পোলাও। রাতে ফ্রায়েড রাইস, সঙ্গে ফুল কপির রোস্ট। এছাড়া দুই বেলায় থাকছে মিষ্টি।