নিজস্ব প্রতিনিধি: জাতীয় প্রতিরক্ষা অ্যাকাডেমি’র(এনডিএ) পরীক্ষায় সাফল্য মিলল মালদহের পড়ুয়ার। সর্ব ভারতীয় স্তরের ওই পরীক্ষায় ৬৬তম স্থান দখল করেছে ইংরেজবাজারের তরুণ অর্ণব দাস। পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র ওই পড়ুয়া তালিকায় স্থান পেয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে এনডিএ’র পরীক্ষার ফল। সেই পরীক্ষায় বাংলা থেকে একমাত্র পড়ুয়া অর্ণব দাস সাফল্য পেয়েছে। মালদহের পরাণপুর গ্রামের বাসিন্দা অর্ণব। সে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির থেকে ২০২১ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৮২ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। মাধ্যমিকেও প্রায় ৯৫ শতাংশ নম্বর পায় ওই পড়ুয়া। অর্ণবের বাবা অশোক দাস ছিলেন স্কুল শিক্ষক। শৈশবে বাবাকে হারান অর্ণব। মা বিপাশা তালুকদার দাস ইংরেজবাজারের জহরাতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের করণিক।
এনডিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অর্ণব এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর কমিশনড অফিসার হওয়ার। কিছুদিনের মধ্যেই মালদহ থেকে ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাদেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য চলে যাবে এই তরুণ। এই সাফল্য নিয়ে সে জানায়, ‘ছোটবেলা কেটেছে পরাণপুরে। ওই এলাকায় ঘরে ঘরে প্রায় সেনাবাহিনীর কর্মী রয়েছেন। তবে আমার এনডিএ সম্পর্কে তেমন কিছু জানাই ছিল না। একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় প্রথম এই সর্বভারতীয় পরীক্ষা সম্পর্কে জানতে পেরে প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য তেমনভাবে সময় দিতে না পারায় প্রথম দু’বার লিখিত পরীক্ষায় সফল হতে পারিনি। কিন্তু হাল ছাড়িনি আমি। তৃতীয়বারের পরীক্ষায় লিখিত পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সাফল্যের পরে ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ পাই।’
ইন্টারভিউ হয়েছিল ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ কর্ণাটকের মাইসুরুতে এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে। ২২৮জনের ইন্টারভিউ ছিল সেই দফায়। স্ক্রিনিংয়ের পরে টিকে যান মাত্র ৯১ জন। অর্ণব বলে, ‘প্রত্যেক বছর দু’বার করে পরীক্ষা নেয় এনডিএ কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেকটি পরীক্ষার নির্দিষ্ট কোর্স রয়েছে। আমি ছিলাম এনডিএ-২ (২০২১) – এর পরীক্ষার্থী। আমাদের কোর্স নম্বর ছিল ১৪৮। শেষ পর্যন্ত এই পরীক্ষায় এই রাজ্য থেকে মাত্র দু’জন রয়ে গিয়েছিলেন। আমি ছাড়াও কলকাতার একজন তরুণ ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত তিনি চূড়ান্ত মেডিক্যাল পরীক্ষায় আটকে যান বলে জেনেছি। পরে এই পরীক্ষাতে রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে সফল হয়ে খুব ভালো লাগছে।’
প্রথমদিকে র্যাঙ্ক করায় নিজের পছন্দের এয়ারফোর্সে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন অর্ণব। এখন তিন বছর চলবে এনডিএ’তে তাঁর প্রশিক্ষণ। একইসঙ্গে বিটেক কোর্সও করানো হবে তাঁকে। তারপর আরও আরও এক বছর এয়ারফোর্স অ্যাকাদেমিতে তাঁর বিশেষ প্রশিক্ষণ হবে। প্রশিক্ষণের সমস্ত খরচ বহন করবে ভারত সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এই কোর্স শেষ করার পরেই বিমানবাহিনীর পদস্থ আধিকারিক হিসাবে আনুষ্ঠানিক যোগদান করবেন তিনি। পদমর্যাদা হবে অতিরিক্ত পুলিস সুপারের সমতুল্য। অর্ণবের এমন সাফল্যে খুশি এলাকাবাসী।