নিজস্ব প্রতিনিধি: বীরভূম জেলার রামপুরহাট থানার বকটুই গ্রামের নৃশংস ঘটনার তদন্তে রাজ্য সরকারের তরফে প্রথমে সিট বা স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু পরে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় সিট নয়, বকটুই নিয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত করবে সিবিআই(CBI)। সেই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) প্রথমে কিছু না জানালেও রবিবার উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার গোঁসাইপুর থেকে বকটুই কাণ্ডে সিবিআই-য়ের তদন্ত নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন তিনি। কার্যত সিবিআই-য়ের সঙ্গে সহযোগিতার করার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এমনকি সিবিআই-য়ের নিরপেক্ষতা ও কার্যগত ক্ষেত্রের সাফল্য নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সিটকে তদন্ত থেকে সরিয়ে সিবিআই-কে বকটুই কাণ্ডে তদন্তের ভার দেওয়ার ঘটনা যে তিনি ভালো ভাবে নেননি তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
রবিবার গোঁসাইপুরের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বকটুইকাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে বলেন, ‘বাংলা সবচেয়ে শান্তির জায়গা। কিন্তু মনে রাখবেন হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না। সব জগতেই ভাল-খারাপ আছে। নেতাই-কাণ্ডে এখনও বিচার হয়নি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল চুরির ঘটনাতেও কিছু বার হয়নি, কেউ ধরা পড়েনি। তাপসী মালিক হত্যাকাণ্ডেও এখনও কেউ ধরা পড়েনি। কিন্তু কিছু লোক আছে যারা দাদু-নাতির গন্ডগোল হলেও সিবিআই চায়, মা-মেয়ের গন্ডগোল হলে সিবিআই চায়! আর কত নীচে নামবেন? উন্নাও(Unnao), হাথরস(Hathras), লখিমপুরের ঘটনায় কী বিচার হয়েছে? সিবিআই হয়েছে? অসমে এনআরসি নিয়ে কত লোকের মৃত্যু হল, দিল্লিতে(Delhi) কত লোক মারা গেল। কেউ বিচার পেয়েছে? কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশে বিচার হয়েছে? ত্রিপুরা, অসম, উন্নাও, দিল্লির হিংসায় আমাদের প্রতিনিধি দলকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আর এখানে আমি যাতে যেতে না পারি তাই সকাল-বিকেল সেজেগুজে টিভিতে চলে যাচ্ছে।’
কার্যত এর পরেই সিবিআই-কে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ঘটনা ঘটার পর আমাদের সিট অনেক কাজ করেছে। আপনারা সিবিআই করেছেন, ভাল করেছেন। সিবিআই কাজটা করুক আমাদের সহযোগিতা থাকবে। কিন্তু এই কাজটা না করে যদি অন্য কাজ করতে যান বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের কথা মতো। তাহলে মনে রাখবেন রাস্তায় আন্দোলনে আমরাই নামব। একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যেহেতু বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে পারেন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাঁকে আঘাত করা হচ্ছে। ওই পরিবারগুলোর সাথে আমি কথা বলেছি। লখিমপুর, উন্নাও, আসাম কটা বিচার হল? কোনও বিচার পেয়েছেন? ত্রিপুরায় আমাদের দল মিটিং করতে গেলে আমাদের গাড়ি ভাঙে, মারধর করে, জেলে ঢোকায়। হাথরস, দিল্লি কোথাও আমাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। নোবেল থেকে নন্দীগ্রাম, নেতাই সিবিআই কিছু করতে পারেনি। এই সবের বিচার হয়নি। টিএমসি কাজ করছে তাই ওদের সহ্য হচ্ছে না।’