নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বেশির ভাগ সময়ে ‘অপমানিত’ বোধ করতেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (SUVENDU ADHIKARY)। তিনিও ‘অপমানিত’ বোধ করেছেন। তাই উপস্থিত হননি রাজ্যপালের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। বুধবার যখন এই ছবি, তখনই অন্য ছবি ধরা পড়ল বিধানসভায়। রাজনৈতিক সৌজন্য দেখালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (CM) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (MAMATA BANERJEE) এবং বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু (BIMAN BOSE)। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীও।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এতদিন আক্ষেপ করে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলতেন, তাঁকে সরকারি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। সাম্প্রতিক কালে দেখা গিয়েছে, আমন্ত্রণ পাচ্ছেন শুভেন্দু। তবে উপস্থিতি চোখে পড়ছে না। বুধবার ছিল রাজ্যের ২২তম রাজ্যপাল (GOVERNOR) সিভি আনন্দ বোসের (CV ANANDA BOSE) শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের (HC) প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব (PRAKASH SHRIVASTAVA)। ওই অনুষ্ঠানের জন্যই শুভেন্দুকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তবে বিজেপির অভিযোগ, বিরোধী দলনেতার আসন বরাদ্দ হয়েছে, দলত্যাগী ২ বিজেপি নেতা কৃষ্ণ কল্যাণী ও বিশ্বজিৎ দাসের পাশে। উল্লেখ্য, তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মামলা করেছে বিজেপি। দাবি, বিধায়ক পদ খারিজ করতে হবে। তাঁদের কাছে বিরোধী দলনেতার আসন নির্দিষ্ট করার জন্যই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি শুভেন্দু।
আরও পড়ুন: জঙ্গলের লোকই জঙ্গলকে বোঝে, কলকাতার মানুষ বুঝবে না: মমতা
এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন সিপিএম নেতা বিমান বসু। উপস্থিতও হয়েছিলেন তিনি। তাঁকে দেখতে পেয়েই এগিয়ে গিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বর্ষীয়ান বাম নেতার কাছে গিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করেন, কেমন আছেন বিমান দা? বলেন, পেছনে কেন বসে আছেন? সামনে আসুন। এরপরেই দেখা যায় ‘বিমান দা’র হাত ধরে তাঁকে সামনের দিকে নিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজে এগিয়ে দিয়েছেন চেয়ার। সৌজন্য বিনিময় করে ওই চেয়ারেই বসেন বাম নেতা। নতুন রাজ্যপালকে হাত নাড়িয়ে সৌজন্য বিনিময়ও করেন বিমান বসু।
একদিকে যখন ব্যক্তি আক্রমণ, কু-কথার ঝড়। যখন ‘অপমানিত’ বোধ, যখন চূড়ান্ত রাজনৈতিক অসৌজন্য দেখা দিচ্ছে রাজ্য জুড়ে তখন রাজনীতির সৌজন্যের পাঠ দিলেন দুই ‘দুঁদে’ নেতা-নেত্রী। যাদের মতাদর্শ সম্পূর্ণ আলাদা। এই সৌজন্যই তো বাংলার রাজনৈতিক সংস্কৃতি। হারিয়ে যেতে চলেছে সেই সংস্কৃতিই।