নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) আগে ‘রাস্তাশ্রী’(Rastasree) প্রকল্পের অধীনে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কিমি রাস্তা রাস্তা সারাই ও নির্মাণ করার টার্গেট নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। সেই জন্য নবান্ন(Nabanna) থেকে প্রতিটি জেলার কাছ থেকে কোন কোন গ্রামীণ রাস্তা তৈরি বা সংস্কার করতে হবে তার তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। সেই তালিকা আসতে দেখা যায় তালিকায় থাকলেও বাস্তবে হদিশ মিলছে না ১, ২৬৬টি রাস্তার। এবার সেই রাস্তাগুলির নাম দ্রুত পৃথকভাবে রাস্তাশ্রী পোর্টালে তোলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে পঞ্চায়েত দফতরের(Panchayat Department) তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হদিশ না পাওয়া রাস্তাগুলির নাম পৃথকভাবে পোর্টালে তুলতে হবে। তারপর সেখানে নতুন রাস্তার নাম ঢোকানো যাবে। খোঁজ না পাওয়া রাস্তাগুলির বদলে অন্য কাজ করতে গেলে তা রাস্তাশ্রী পোর্টালে নথিভুক্ত করা দরকার। সেই জন্যই এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিকে।
আরও পড়ুন Divorce মামলায় মেয়েদের ও দিতে হবে আয় ও সম্পত্তির হিসাব
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রাম বাংলার বুকে সাড়ে ১১ হাজার কিলোমিটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তার জন্য ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করা হয় চলতি মাসে পেশ হওয়া রাজ্য বাজেটে। সেখানে ৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে এই প্রকল্পের জন্য। ঠিক করা হয়েছে গ্রাম বাংলায় ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৯ হাজার রাস্তা আগামী ২ মাসের মধ্যেই তৈরি করে ফেলা হবে ওই প্রকল্পের মাধ্যমে। সেই হিসাবে জেলা থেকে আসা রাস্তা তৈরির প্রস্তাব এক এক করে অনুমোদন দিচ্ছে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। আর সেই অনুমোদন দিতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকদের। কেননা দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জেলা রাস্তার যে তালিকা পাঠিয়েছে, তার মধ্যে ১,২৬৬টি রাস্তার খোঁজই মিলছে না। এই ঘটনায় রীতিমতো অবাক নবান্নও। কেন এমনটা হল, সেই কৈফিয়ত চাওয়া হচ্ছে ওই সব জেলা প্রশাসনের কাছে। যে সব রাস্তার খোঁজ মেলেনি, তার একটি আলাদা তালিকাও তৈরি করেছেন পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরা। আর সেটাও তাঁরা করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে। তিনি এই ঘটনা জানার পরে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, ওই রাস্তাগুলি সংস্কারের কাজ হবে না।
আরও পড়ুন মমতার ‘মেধাশ্রী’র নাম নথিভুক্তকরণ শুরু, মানতে হবে এইসব বিধি
সেই নির্দেশের পরেই এখন স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সব দিক খতিয়ে দেখেই প্রতিটি রাস্তা তৈরির অনুমোদন দিচ্ছে পঞ্চায়েত দফতর। তারপর রাস্তা তৈরি বা মেরামতির দরপত্র ডাকছে জেলা প্রশাসন। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে রাস্তাশ্রী প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিতে চায় নবান্ন। সেই কারণে এই ১,২৬৬টির বদলে যেসব রাস্তায় কাজ হবে, সেগুলি চিহ্নিতকরণের কাজ দ্রুত শেষ করে ফেলতে তৎপর জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রাস্তাস্রী প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ২৫ লক্ষ এবং পিচ রাস্তার জন্য গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তার থেকে কিছুটা বেশি হলেও অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকায় পৌছে যাচ্ছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ১ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা খরচের কথাও বলা হয়েছে। এর জন্য মৌখিকভাবে অনেকেই অনেক কারণ তুলে ধরেছেন। যেমন, রাস্তার দু’দিকে পুকুর থাকলে পার বাঁধানো বা পাইলিংয়ের খরচ, আবার কোথাও রাস্তা তৈরির জন্য মাটি কাটার খরচ। রাজ্য সরকার চাইছে, যুক্তিসঙ্গত খরচ হোক। তাই কাজের শুরুতেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা তা দেখে নিতে চাইছে। নবান্ন থেকে ব্লে দেওয়া হয়েছে রাস্তা তৈরির খরচ সব জায়গাতেই কম-বেশি এক রাখার কথা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই একই ব্লকে একই দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের রাস্তা তৈরির এস্টিমেটে বিস্তর ফারাক দেখা যাচ্ছে। যা রাজ্যের বেঁধে দেওয়া খরচের তুলনায় অনেক বেশি। ফলে অতিরিক্ত খরচের কারণ লিখিতভাবে দর্শাতে হচ্ছে জেলা প্রশাসনকে। জেলার সেই তথ্য পর্যালোচনার পরেই ওই সমস্ত রাস্তা তৈরির খরচ ঠিক হবে।