নিজস্ব প্রতিনিধি: তবি বিকালের টর্নেডোয়(Tornedo) সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা(Jalpaiguri District)। তবে সেই টর্নেডোর আঁচ পড়েছে পাশের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলাতেও(Alipurduyar District)। এদিন জলপাইগুড়ির জেলার চালসা থেকে হেলিকপ্টার করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চলে আসেন আলিপুরদুয়ারে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করতে। গতকালের ঝড়ে আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের চকোয়াখেতি, তপসিখাতা এলাকাতে ক্ষয়ক্ষতি হয় বহু বাড়িতে। পাশাপাশি কুমারগ্রাম ব্লক, আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক-সহ একাধিক জায়গায় শিলাবৃষ্টির জেরে টোম্যাটোর পাশাপাশি একাধিক খেতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঝড়ে বড়-বড় গাছ ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে একাধিক এলাকা। রবিবার ঝড়ের পরেই চকোয়াখেতি-সহ একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। এদিন তপসিখাতা(Topsikhata Village) এলাকায় যান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সেখানে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, জেলা প্রশাসন যেভাবে দ্রুত উদ্ধারকার্য শুরু করেছে তা রীতিমত প্রশংসনীয়। আমি ওদের বলেছি কোথায় কীরকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা একটা সার্ভে ক্লরে দেখে নিতে। জলপাইগুড়ির পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার আর কোচবিহারেও সেই সার্ভে হবে। এখানে অনেকেই আমাকে বলেছেন, তাঁদের সব হারিয়ে গিয়েছে। সব ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। আমি ওদের সঙ্গেও কথা বলে বুঝেছি, ওরা খুব কষ্টে আছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা ওদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। অদের ঘরদোর সব ভেঙে পড়েছে। জামাকাপড় সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। খাবারের থালাটুকুও নেই। আমি ওদের বলেছি, এখনই গ্রামে ফিরে যাওয়ার দরকার নেই। আগে প্রশাসন থেকে সব ব্যবস্থা করে দিক, তারপর ফিরে যেও। আলিপুরদুয়ারে কেউ জখম না হলেও ঝড়ে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছে। অরূপ বিশ্বাসকে আগামী কাল, মঙ্গলবার কুমারগ্রামে যেতে নির্দেশ দিয়েছি। কোচবিহারেও ঝড় হয়েছে। কোচবিহারে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের এখান থেকেই আমি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এখনও পর্যন্ত জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র কয়েক মিনিটের টর্নেডোয় ৩ জেলারই কোনও না কোনও এলাকা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঝড়ের দরুন ক্ষয়ক্ষতি সব থেকে বেশি হয়েছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লক, ময়নাগুড়ি ব্লক, জলপাইগুড়ি পুরসভা ও কোচবিহারের তুফানগঞ্জে। মোট ৩৬৪২টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত জখমের সংখ্যা ২০৯। যাদের মধ্যে ৩৯ জন ভর্তি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ও ১৭০ জন ভর্তি ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। মোট ১১১০টি ত্রিপল এখনও পর্যন্ত বিলি করা হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তা তাণ্ডবে পরিণত হবে এই আভাস পাননি কেউই।