নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথমে অনেকে অনেক কথাই বলেছিলেন। অনেকে অনেক কিছু ভেবেছিলেন। কিন্তু মেলেনি সেই সব হিসেবনিকেষ। তিনি অনেককেই ভুল প্রমাণিত করেছেন। দিদি তাঁর মাথার ওপর আছে ঠিকই, কিন্তু তিনি এখন পিসির ছত্রছায়া থেকে বেড়িয়ে এসেছেন। বাংলার রাজনীতিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দলনেত্রীও দলের দায়িত্ব তাঁর হাতেই কার্যত তুলে দিয়েছেন। দলনেত্রী যে ভুল কোনও পদক্ষেপ নেননি, সেটা কার্যত প্রমাণিত হয়েই গেল গ্রাম বাংলার(Rural Bengal) রায়ে। মানুষ বুঝিয়ে দিলেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) যোগ্য ব্যক্তির হাতেই তৃণমূলকে(TMC) তুলে দিয়েছেন। পঞ্চায়েতের জয়, শুধু যে তৃণমূলের জয় বা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী প্রকল্পের জয় তাই নয়, এই জয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও(Abhishek Banerjee) জয়। কেননা এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) প্রার্থী বাছাই থেকে দলের প্রচার সবই একা হাতেই সামলেছেন অভিষেক।
আরও পড়ুন মমতার প্রকল্পের হাত ধরেই গ্রামে গ্রামে তৃণমূল ঝড়
তৃণমূলের জন্মের পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ছিলেন এবং এখনও রয়েছেন দলের মুখ হিসাবে। দলে দ্বিতীয় আর কোনও মুখ এখনও তুলে ধরা হয়নি। মমতাই এতদিন যে কোনও নির্বাচনে দলের প্রার্থী নির্বাচন থেকে শুরু করে দলের রণকৌশল ঠিক করা এবং প্রচারের দায়দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু এই ছবিটাই বদলাতে শুরু করে একুশের ভোটের পর থেকেই। দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড হিসাবে উঠে আসতে থাকেন অভিষেক। এই প্রথম মমতা ও অভিষেক দলের হয়ে পঞ্চায়েতের প্রচারে নেমেছিলেন। যদিও হেলিকপ্টার বিভ্রাটে চোট পয়ে মমতা সেভাবে আর প্রচার করে উঠতে পারেননি। অভিষেক কিন্তু থেমে যাননি। তিনি পঞ্চায়েতে প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন। সব থেকে বড় কথা অভিষেকের প্রচারটা শুরুই হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার বহু আগেই থেকেই। সরাসরি মানুষের সঙ্গে জনসংযোগের যে যাত্রা অভিশেক শুরু করেছিলেন রাজ্যজুড়ে সেটাই কার্যত হয়ে উঠেছিল তৃণমূলের পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার। সেই নবজোয়ার কর্মসূচী একা হাতেই সামলেছেন অভিষেক।
আরও পড়ুন কোথায় বিজেপি, জোড়াফুলের ধাক্কায় কুপোকাত পদ্ম
নবজোয়ার কর্মসূচীর মধ্যেই অভিষেক পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য দলের অন্দরেই ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। রাজ্যের ১৯টি জেলাজুড়ে দীরজ্ঞহ ২ মাস ধরে চলেছে তাঁর সেই কর্মসূচী। দলের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক, তাঁদের সঙ্গে খাওয়াদাওয়া, থাকা, গ্রামে গ্রামে মানুষের কাছে গিয়ে তাঁদের অভাব অভিযোগ শোনা, প্রতিটা দিন একের পর এক সভা, রোড শো, কখনও কখনও পায়ে হেঁটে ভিড়ের মাঝে মিশে জনসংযোগ, অভিষেককে মানুষের অন্তরে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। কার্যত তৃণমূলের পঞ্চায়েতের প্রচার সেই সময়েই সুসম্পন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেই প্রচারের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেনি বিরোধীরা। অভিষেক সেই যাত্রায় কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলার বুকে হোক কী তৃণমূলের অন্দরে, তিনিই এখন মমতার পরে সব থেকে বড় ক্রাউডপুলার। আর যার পিছনে থাকবে জনতা, দল তো তাঁর হাতের মুঠোয় চলে আসবে। সেটাই হয়েছে। মমতা যোগ্য ব্যক্তির হাতেই দলকে তুলে দিয়েছেন।