নিজস্ব প্রতিনিধি: সতর্কবার্তা আগেই এসেছিল। পাঠিয়েছিল রাজ্য গোয়েন্দা দফতর। সেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল জঙ্গলমহলের(Junglemahal) পাঁচ জেলার এসপি(SP) ও আইবি(IB) অফিসে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছিল মাওবাদীদের নামে দেওয়া পোস্টারের পিছনে মৃত্যুফাঁদ থাকতে পারে! কোনও পোস্টারকে হালকা ভাবে নিলে চলবে না। তাই মাওবাদী(Maoist) নামাঙ্কিত পোস্টার উদ্ধারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেই সতর্কবার্তা মিলিয়ে শনিবার এক গুচ্ছ মাওবাদী পোস্টার(Postar) উদ্ধার হল পুরুলিয়া জেলার আশা থানার বেশ কিছু গ্রামপঞ্চায়েতে(Gram Panchayet)। আর এই পোস্টার উদ্ধারের ঘটনা ঘটল রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় হতে চলা নির্বাচনের ঠিক একদিন আগেই। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পুরুলিয়া(Purulia) জেলার ৩টি পুরসভা এলাকাতেও। যদিও এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের দিন কোথাও মাও হামলা চালাবার কোনও ইতিহাস নেই, তবুও এই ঘটনার পরে পুরুলিয়া জেলার ৩টি পুরসভাতেই এদিন বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার পুরুলিয়া জেলার সদর মহকুমার আরশা(Aarsha) থানা এলাকার ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মাওবাদীদের নামাঙ্কিত বেশ কিছু পোস্টার চোখে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভোর ৪টে থেকে ৫টার মধ্যে পোস্টার পড়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ঘটনার জেরে দ্রুত খবর যায় পুলিশের কাছেও। এদিন যেসব জায়গায় ওই পোস্টার পড়েছে তার মধ্যে প্রথমেই আছে আরশা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। সেখানে নয়া মোড় এলাকার ভীম কুমারের ওষুধ দোকানে, করন্ডি মোড় এলাকায় বিনোদ মাঝির পানের দোকানে, আরশা কলেজের গেটে ও কদমপুর রেস্ট হাউসের দেওয়ালে ওই পোস্টার দেখতে পান গ্রামবাসীরা। আবার ছাতুহানসা(Chatuhansa) গ্রাম পঞ্চায়েতের হেরডি মোড় এলাকায় লাল গঁরাইয়ের চায়ের দোকানেও ওই পোস্টার দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। পোস্টার পড়েছে হেনশলা(Henshla) গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশিরডি মোড় এলাকার পান্ডব কুমারের চায়ের দোকানে, পুয়াড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কান্টাডি মোড়ে থাকা পুয়াড়া(Puyara) গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসে, মানিকিয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের জিবনডি মোড়ের তুনারাম মাহাতোর মুদি দোকানে এবং কুইলু সিংহের কাপড়ের দোকানে।
এদিন যে সব পোস্টার চোখে পড়েছে তা মাওবাদীরাই দিয়েছে কিনা তা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুলিশের আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, মাওবাদীরা সর্বত্রই লাল কালিতে হাতে লেখা পোস্টারই দেয়। সেই জায়গায় সাম্প্রতিককালে বার বার মাওবাদীদের নামাঙ্কিত যে সব পোস্টার উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে তা ছবই ছাপাখানায় মুদ্রিত হওয়া পোস্টার। কিন্তু এই সব পোস্টারের কোনও ক্ষেত্রেই এখনও পর্যন্ত কোনও মাওবাদী যোগ সামনে আসেনি। বরঞ্চ সামনে এসেছে যে মাওবাদীদের নাম করে কিছু যুবক এইসব কাজ করে জঙ্গলমহলের বুকে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তাই আরশা এলাকায় যেসন পোস্টার এদিন পড়েছে তা যে মাওবাদীরাই দিয়েছে তা জোর গলায় বলার কোনও জায়গা নেই। তবে পুলিশ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছে। এদিনের পোস্টারে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে যার সব কিছুই কেন্দ্র সরকারের(Central Government) কাছে রাখা হয়েছে। সাধারণত এই ধরনের দাবি রাজ্য সরকারের কাছে করা হয়। কেননা রাস্তাঘাট(Roads), সেচ(Irigation), পুলিশের(Police) মতো বিষয়গুলি রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে জড়িত। তাই এইসব বিষয়ে কেন কেন্দ্রের কাছে দাবি করা হচ্ছে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।