নিজস্ব প্রতিনিধি: সুন্দরবনের গভীরে জীবন এক প্রকার অনিশ্চিত, তবুও তাদের মধু সংগ্রহে যেতে হয় দখিন রায়ের জঙ্গলে। মধু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে পাড়ি দিচ্ছেন মৌলিরা। ইতিমধ্যে বন দফতরের তরফে ছাড়পত্র দেওয়া শুরু হয়েছে মৌলিদের।
বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহের জন্য জঙ্গলে পাড়ি দেন মৌলিরা। সংসার চালাতে একটু সাহসের ওপর ভর করে তাঁরা পৌঁছে যান জঙ্গলের গভীরে।বাঘের আক্রমণের ভয়, চোরাশিকারিদের হামলা—এই সবকিছুর আশঙ্কা রয়েছে জেনেও দুটো পয়সা রোজগারের জন্য তারা বাড়ি ছাড়েন অনিশ্চিত জীবনের দিকে। এবারেও মধু সংগ্রহ করতে বন দফতরের ছাড়পত্র নিয়ে মৌলিরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে পাড়ি দিচ্ছেন জঙ্গলে। জঙ্গলের উদ্দেশ্যে বাড়ি ছাড়ায় আবেগবিহ্বল হয়ে তাঁদের বিদায় জানাচ্ছেন পরিবারের মহিলারা।
সুন্দরবনে বাঘের হানায় প্রতি বছর মানুষের মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসে। জঙ্গলের গভীরে ঢুকলে যে জীবন এক প্রকার অনিশ্চিত তা জানেন মৌলিরা। তবুও বেঁচে থাকার জন্য রোজগারের উদ্দেশ্যে তাঁদেরকে যেতে হয় সুন্দরবনে। জঙ্গল থেকে মধু সংগহ করে এনে বাজারে বিক্রি করেন মৌলিরা। ১৮০ টাকা কেজি দরে বাজারে এই মধু বিক্রি করা হয়। আর সেই টাকায় চলে তাঁদের সংসার। বন দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে গত বছরের তুলনায় এ বছর অনেকটাই বেড়েছে মধু সংগ্রহকারীর সংখ্যা। আনুমানিক ৫০ জন মৌলি ইতিমধ্যেই আবেদন জানিয়েছেন বন দফতরের কাছে। সুন্দরবনের জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করেন মৌলিরা। বাঘের আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করতে বিশেষ মুখোশ পরেন তাঁরা। বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে মধু সংগ্রহ করার জন্য বেরিয়ে পড়েন মৌলিরা। একটি মৌচাক ভাঙলে মেলে ২০-২৫ কিলো মধু। আগে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহে গিয়ে বাংলাদেশি দস্যুদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন অনেক মৌলি। এবারে তাঁদের নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।