নিজস্ব প্রতিনিধি: বাবার চোখে সমস্যা। দেখতে পান না বললেই চলে। অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার টানেন তরুণী। বাড়িতে দাদা থাকলেও তাঁর হাতে কাজ থাকে না সবসময়। তার মধ্যেও কোনওরকমে বাবার চোখের অপারেশনের জন্য ১০ হাজার টাকা জমিয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু সেই টাকাই শেষে নিজের ধর্ষকদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হলেন তরুণী। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে বাংলার পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার কাঁথি(Contai) থানার মনোহরচক গ্রামে। ঘটনার মূল ৩ অভিযুক্ত গুড্ডু খান, শেখ জামসেদ ও শেখ সালিমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেও তাঁরা ধরা না পড়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন আমজনতা। যদিও কাঁথি থানার আইসি(IC) অমলেন্দু বিশ্বাস জানিয়েছেন, তদন্ত শুরু হয়েছে। তিন যুবকের খোঁজ চলছে। আশা করছি তারা খুব শীঘ্রই ধরা পড়বে।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ৩ যুবকই নিগৃহীতা যুবতীর প্রতিবেশী। মাস ছয়েক আগে অভিযুক্তদের একজন রাত ১০টা নাগাদ নির্যাতিতার বাড়িতে এসে তাঁকে বাইরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই বাকি ২জন উপস্থিত ছিল। নির্যাতিত্যার দাবি, সেখানে গুড্ডু খান তাকে জানিয়েছিল তাদের কাছে ওই তরুণীর স্নান করার ভিডিও(Video) আছে। তাই শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হলে সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায়(Social Media) ছড়িয়ে দেবে তারা। সেই হুমকির মুখে পড়ে তরুণী বাধ্য হন তাদের প্রস্তাবে রাজি হতে। কার্যত ৩ যুবক সেদিন নির্যাতিতাকে গণধর্ষণ করে ও সেই ঘটনার ভিডিও তুলে রাখে। গত এপ্রিল মাসে ওই তিনজন ফের যুবতীর বাড়িতে গিয়ে সেই গণধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে ২০হাজার টাকা দাবি করে। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তারা সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেবে বলে জানায়।
সেই হুমকির মুখে পড়ে অসহায় ওই যুবতী বাবার চোখের অপারেশনের জন্য সঞ্চিত ১০হাজার টাকা তিনজনের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু তাতেই খাই মেটেনি শয়তানদের। মে মাসের শেষ দিকে তারা আবার ওই তরুণীর কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করলে তরুণী তখন গোটা ঘটনা তাঁর বাবা ও দাদাকে জানাতে বাধ্য হন। এরপর চলতি মাসের ১০ তারিখে কাঁথি থানায় ওই ৩ যুবকের নামে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। সেই অভিযোগ দায়ের পর থেকেই এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছে ৩ অভিযুক্ত গুড্ডু খান, শেখ জামসেদ ও শেখ সালিম। কিন্তু অভিযোগ দায়ের হওয়ার এক সপ্তাহ বাদেও কেন ওই ৩জন ধরা পড়ল না তাই নিয়েই এখন ক্ষুব্ধ ওই নির্যাতিতার পরিবার। ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যেও।