নিজস্ব প্রতিনিধি: ট্রেন না পেয়ে সড়কপথেই দিল্লি(Delhi) অভিযানে নেমে পড়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। এদিন সকাল ৯টা থেকে বাস ছাড়ার কথা থাকলেও প্রথম বাস কলকাতার(Kolkata) নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সামনে থেকে ছাড়ে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। তারপর থেকে একের পর এক বাস ছাড়ছে দিল্লির পথে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মোট ৫০টি দূরপাল্লার স্লিপার ক্লাসের বাসে করে দলের জনপ্রতিনিধি এবং একশো দিনের কাজের জব কার্ড হোল্ডাররা(Job Card Holders) দিল্লিতে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলতে পারে এই বাস ছাড়ার প্রক্রিয়া। প্রয়োজনে আরও বাস আনা হতে পারে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। বাস প্রতি ভাড়া পড়ছে ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। রবিবার রাতের মধ্যেই দিল্লি পৌঁছে যাবে বাসগুলি। সে ক্ষেত্রে সোমবার সকালে দলের কর্মসূচিতে যোগ দিতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় বাসের যাত্রীদের।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আসানসোল, ধানবাদ, বারাণসী, আগরা হয়ে প্রায় ১৬০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে দিল্লি পৌঁছবে বাসগুলি। যেতে সময় লাগবে ৩৬-৪০ ঘণ্টা। গোটা যাত্রা পথে ৪-৫ বার দাঁড়াবে বাস। একটানা কোনও চালক বাস চালাবেন না। তাই প্রতি বাসে দু’জন করে থাকছেন চালক। প্রতিটি বাসেই ৭০ থেকে ৭২টি আসন থাকছে। সূত্রের খবর, আসনের অতিরিক্ত যাত্রী কোনও বাসেই নেওয়া হচ্ছে না। ডায়াবেটিস, পেট খারাপ জনিত যাত্রীর কোনও সমস্যা হলে বাস দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ তৃণমূলের স্বেচ্ছাসেবককে জানানো হবে। সেইমতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন তাঁরা। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর দিল্লি থেকে বাস কলকাতায় ফেরত আসবে। ঘটনাচক্রে, বাসগুলি বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশ পেরিয়েই দিল্লি পৌঁছবে। সেখানে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এমন আশঙ্কার প্রেক্ষিতে শুক্রবারই হুঁশিয়ারির সুরে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি জানিয়েছেন, ‘বিজেপি শাসিত কোনও রাজ্যে যদি সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের গায়ে হাত পড়ে, তা হলে আমরাও ছেড়ে কথা বলব না।’ তৃণমূল সূত্রে খবর, দিল্লির পাহাড়গঞ্জ রোড, চিত্তরঞ্জন পার্ক, দিল্লি কালীবাড়ি সংলগ্ন এলাকার অতিথিশালা এবং পান্থনিবাসগুলিতে বাসযাত্রীদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দলের কিছু শীর্ষ পদাধিকারী রবিবার সকালেই দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছেন। সব বাস পৌঁছে গেলে দলের কর্মীসমর্থক এবং জব কার্ড হোল্ডারদের নিয়ে আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা সারবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। এর আগে দিল্লি যাত্রার জন্য গোটা ট্রেন ভাড়া করতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল তৃণমূল। জমা দেওয়া হয়েছিল রেলের ঠিক করে দেওয়া ভাড়া এবং সিকিউরিটি ডিপোজ়িটও। কিন্তু সেই আবেদন নাকচ হয়ে যায়। রেলের তরফে দাবি করা হয়, তৃণমূল ট্রেন চেয়েছিল আইআরসিটিসির কাছে। সেই আবেদনের কথা জানার পরে চেষ্টা করেও ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায়নি। ৫০টি বাস ভাড়ায়(Bus Rent) এখনও পর্যন্ত তৃণমূলের খরচ হয়েছে ১ কোটি ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বাসের সংখ্যা বাড়লে খরচের পরিমাণও বাড়বে।