নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত ভোটে হাতে হাত মিলিয়ে লড়াই করেছে সিপিএমের(CPIM) হার্মাদ আর বিজেপির(BJP) জল্লাদরা। অন্তত এমনটাই অভিযোগ তৃণমূলের(TMC) ঘরছাড়া কর্মীদের। শুধু তাই নয়, তৃণমূল করা এবং ভোট দেওয়ার অপরাধে তাঁদের এখন গ্রামছাড়া করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার হলদিয়া মহকুমার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। সেই নন্দীগ্রাম(Nandigram) যা রাজ্য রাজনীতির পাশাপাশি জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও জমি আন্দোলনের পীঠস্থান হিসাবে চিহ্নিত। সেই নন্দীগ্রাম যেখানকার বিধায়ক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এখন সেই নন্দীগ্রামের সোনাচূড়া(Sonachura) গ্রাম পঞ্চায়েতের বুকেই কার্যত হার্মাদ-জল্লাদদের শাসন স্থাপিত হয়েছে। আর তার জেরে কয়েকশো তৃণমূলকর্মীকে এখন ঘরছাড়া হতে হয়েছে।
ঘরছাড়া তৃণমূলকর্মীদের অভিযোগ, সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে এখন যারা বিজেপির মুখ সেই জয়দেব পাইক, আশিস মণ্ডলেরা আদতে সিপিএমের হার্মাদ। ২০০৭-০৮ সালে সিপিএমের ওই জঙ্গি কর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছিল। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁদের সামনে রেখেই সোনাচূড়ায় তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করে পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হয়েছেন আশিস মণ্ডল। সংরক্ষিত আসনে প্রধান হয়েছেন শিউলি পাত্র দাস। তিনিও সিপিএম পরিবার থেকেই এসেছেন। তাঁর দুই ভাসুর জমি আন্দোলনপর্বে ঘরছাড়া ছিলেন। অপরদিকে, জয়দেব পাইক সোনাচূড়া অঞ্চলে বিজেপির সংগঠনের রাশ ধরে আছেন। বোর্ড গঠনের পর থেকেই নন্দীগ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত সোনাচূড়া। সেখানকার বাজারে তৃণমূলের পার্টি অফিস তালাবন্ধ। কয়েকশো তৃণমূলকর্মী ঘরছাড়া। যারা এখনও সেখানে আছেন তাঁদের নিত্যদিন বাম-বিজেপির নিগ্রহ, অত্যাচার আর লাঞ্চনার মুখে পড়তে হয়েছে।
সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে একদা সিপিএমের হার্মাদরাই এখন বিজেপির মুখ। তাঁদেরই পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় বসিয়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের পরেই জার্সি বদলানো সেই সব নেতারা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে নেমেছেন। ১৬ বছর আগে জমি আন্দোলনের সময় দায়ের হওয়া সমস্ত মামলা তোলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। ওই হার্মাদদের প্রতিহিংসায় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হচ্ছে বলে এখন অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূলের সোনাচূড়া অঞ্চল সভাপতি কালীকৃষ্ণ প্রধানের দাবি, ‘জমি আন্দোলনর সময় জনরোষে বহু সিপিএম নেতা ঘরছাড়া হয়েছিলেন। সেই ঘরছাড়া হার্মাদরাই এখন বিজেপির মুখ। দেড়দশক পর তাঁদের মেশিনারির ওপরে ভরসা করে পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। আর সুযোগ বুঝে হার্মাদরা আমাদের কর্মীদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। পুরনো মামলা তোলার জন্য চাপ দিচ্ছে। জরিমানা দিয়ে ঘরছাড়াদের ঘরে ফিরতে হবে বলে ফতোয়া দিচ্ছে।’