নিজস্ব প্রতিনিধি: ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস আটকানো সম্ভব নয়। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা যায়। এবার সেই লক্ষ্যেই সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা নিল নবান্ন। ঠিক হয়েছে নেদারল্যান্ডসের মডেলে নিকাশি পরিকাঠামো তৈরি করা হবে দিঘা-মন্দারমনি-তাজপুর-শঙ্করপুরে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, উন্নততর নিকাশি ব্যবস্থার মাধ্যমে এই পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে দ্রুত সমুদ্রের জল বের করে দেওয়া সম্ভব। এরজন্য প্রয়োজন আধুনিক প্রযুক্তি ও পরিকাঠামো। নবান্ন সূত্রে খবর, নেদারল্যান্ডসের মডেলকে সামনে রেখেই তৈরি হবে ডিটেলস প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ডিপিআর। এরজন্য ডাকা হয়েছে টেন্ডারও।
নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, দিঘা-শঙ্করপুর ও মন্দারমণিকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্ন কর্তাদের বক্তব্য, জলচ্ছ্বাস রোধ করা সম্ভব না হলেও জল দ্রুত বের করে দেওয়া সম্ভব। এরজন্য প্রয়োজন বিশ্বমানের নিকাশি ব্যবস্থা এবং প্রসস্ত নালা। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রে প্রসস্ত নালা তৈরির কাজ হবে। এবং তৈরি হবে অত্যাধুনিক পাম্পিং স্টেশন। রাজ্য অর্থ দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার পরই ডিপিআর তৈরির জন্যে দিঘা-শঙ্করপুর ডেভলপমেন্ট অথিরিটি টেন্ডার ডেকেছে। এরপর ধাপে ধাপে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে বলেই জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, চার দিকে সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় এক সময়ে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম শহর-সহ অধিকাংশ নীচু এলাকা ফি-বছরই সমুদ্রের জলে প্লাবিত হতো। সেটা আটকানোর জন্য সেখানে অনেক প্রসস্ত খাল ও নালা তৈরি করা হয়েছিল। পাশাপাশি জল নিষ্কাশনের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন পাম্পিং স্টেশনও নির্মাণ করা হয়েছিল। তার ফলে আমস্টারডাম-সহ নেদারল্যান্ডসে এখন আর বন্যা হয় না। সেটাই করা হবে দিঘা-মন্দারমণিতে। কয়েক মাস আগে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুর এবং মন্দারমণিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সমুদ্রের জল বাঁধ টপকে পুরো এলাকা ভাসিয়ে দেয়। সমস্ত হোটেল ও দোকানঘর জলের তলায় ছিল। সমুদ্র শান্ত হওয়ার পরও জল সরতে প্রায় দিন পনেরো লেগেছিল। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্থায়ী সমাধানসূত্র খুঁজে বার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।