নিজস্ব প্রতিনিধি: আগামী সোমবার থেকে শুরু হতে চলেছে মাধ্যমিক পরীক্ষা(Madhyamik Examination)। আর সেই পরীক্ষাতেই প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে আগত পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে শিক্ষকদের এবার কড়া নিয়মের ঘেরাটোপে বেঁধে দিল মধ্যশিক্ষা পর্যদ। মূলত প্রশ্নফাঁস ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য নিয়ম হিসাবে আসতে চলেছে পরীক্ষার প্রথম দেড় ঘন্টায় কোনও পরীক্ষার্থীকেই শৌচালয়ে যেতে না দেওয়ার নিয়মটি। প্রতিদিন সকাল ১১.৪৫ থেকে শুরু হবে পরীক্ষা। তখনই পরীক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হবে। বেলা ১২টা থেকে উত্তর লেখার পালা শুরু হবে। দুপুর ১.১৫ মিনিটের আগে হল থেকে কেউ বাইরে যাওয়ার অনুমতি পাবে না। অর্থাৎ প্রায় দেড়ঘন্টা পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ আসনে বসে থাকতে হবে। মিলবে না শৌচালয়ে(Bathroom) যাওয়ার অনুমতি। শনিবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়(Kalyanmoy Gangopadhay) যে সাংবাদিক বৈঠক করবেন সেখানেই এই নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানা গিয়েছে।
গত বছর কোভিডের কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সেই হিসাবে ২০২০’র পর এবার ফের মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। রাজ্যের পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিকে এবারে ২৪টি এলাকায় ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক ভাগে থাকছেন একজন করে কনভেনর। তাঁদের অধীনে থাকবেন সেন্টার ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ, ভেন্যু সুপারভাইজার, অ্যাডিশনাল ভেন্যু সুপারভাইজার ও পর্ষদ প্রতিনিধি। এই কয়েকজন ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন কেউ পকেটে মোবাইল রাখতে পারবেন না। তবে এই প্রথম পার্শ্বশিক্ষক ও চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের পরীক্ষা প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হচ্ছে। প্রত্যেকটি ভাষার উত্তরপত্রের জন্য আলাদা আলাদা রংয়ের প্যাকেট বরাদ্দ করা হয়েছে। ইংরেজির জন্য সবুজ, নেপালীর জন্য লাল, ওড়িয়ার জন্য কমলা, ঊর্দুর জন্য মেরুন ও হিন্দির জন্য খাতা ঢুকবে নীল প্যাকেটে। পরীক্ষার্থীর সঙ্গে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে পারবেন কেবলমাত্র ১জন। ার সেটাও শুধুমাত্র পরীক্ষার প্রথমদিন। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অর্থাৎ ১১.১৫ মিনিটে সেই অভিভাবককে বাইরে চলে আসতে হবে।
বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্ন, দৃষ্টিহীন ও বধির পরীক্ষার্থীরাও এবারও ৪৫ মিনিট বাড়তি সময় পাবে। কারও শ্রুতিলেখক থাকলে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশে পর্ষদের অনুমতি থাকা বাধ্যতামূলক। শুধু পরীক্ষার্থীই নয় শিক্ষক-শিক্ষিকারাও মোবাইল, স্মার্ট ঘড়ি, ক্যালকুলেটর-সহ কোনও বৈদ্যুতিন যন্ত্র পরীক্ষা চলাকালীন কাছে রাখতে পারবেন না। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রের প্রথম পাতায় নিজের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং রোল নম্বর সঠিক লিখেছে কিনা তা অ্যাডমিট ধরে মিলিয়ে নিতে হবে। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পরে কেউ চাইলে খাতা জমা দিতে পারবে। তবে সেই পরীক্ষার্থীর প্রশ্নও জমা রাখতে হবে। পরীক্ষা শেষে নির্দিষ্ট ছাত্র বা ছাত্রী তার প্রশ্নপত্র ফেরত পাবে। পরীক্ষা শেষের ৩০ মিনিট আগে হলের দরজাগুলি বন্ধ করে সকলের খাতা জমা নেওয়ার পর তা মিলিয়ে দেখে দরজা খোলার নির্দেশ দিয়েছে পর্ষদ। উত্তরপত্র প্যাকেট করার সময় সর্বোচ্চ ৭৫টি খাতা একসঙ্গে রাখা যাবে। ট্রেনে উত্তরপত্র পাঠানোর সময় প্রতিটি পার্সেল ৫০ কিলোর মধ্যে রাখতে হবে। যদি কোনও কারনে উত্তরপত্র হারিয়ে যায় তাহলে দ্রুত তা থানায় এফআইআর করে পর্ষদ সভাপতিকে তা জানাতে হবে বলেও নির্দেশ জারি হতে চলেছে।