নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রাকৃতিক দুর্যোগও তাঁকে থামাতে পারল না। সভায় যেতে না পারলেও সভায় আসা মানুষদের কাছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিজের বক্তব্য পৌঁছে দিলেন তিনি। আর সেই বক্তব্যের শুরুতেই সন্দেশখালি নিয়ে কড়া কটাক্ষ হানেন কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে। নজরে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। এদিন তাঁর ২টি জনসভা করার কথা ছিল। একটি হওয়ার কথা ছিল বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শরাব্দী রায়ের সমর্থনে রামপুরহাটের বুকে, অপরটি হওয়ার কথা ছিল পূর্ব বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলা সরকারের সমর্থনে কালনার বুকে। কিন্তু এদিন দুপুরে হেলিকপ্টারে করে অভিষেক কলকাতা থেকে রওয়ানা দেওয়ার আগেই ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। তার জেরে আর ওই দুই সভায় যেতে পারেননি অভিষেক, কেননা আবহাওয়া খারাপ থাকায় হেলিকপ্টার উড়তে পারেনি। কিন্তু সেই দুই সভায় আসা মানুষজন যাতে নিরাশ না হন তার জন্য তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাঁর বার্তা পৌঁছে দেন সভায় আগত মানুষদের কাছে। এর মধ্যে রামপুরহাটের সভার উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখার সময়ে অভিষেক বিজেপিকে(BJP) খোঁচা দেন সন্দেশখালির(Sandeshkhali) ঘটনা নিয়ে।
এদিন অভিষেক বলেন, ‘গত তিন চার মাস ধরে বাংলাকে(Bengal) কলুষিত করার যে পরিকল্পনা, সেটা এখন জনসমক্ষে চলে এসেছে। সন্দেশখালির যে বেলুন, তাতে আলপিন ফুটে গিয়েছেছে। যারা দিনরাত গলা ফাটাতেন সন্দেশখালির জন্য, মিথ্যে খবর তৈরি করে বাংলাকে নির্লজ্জ ভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টার জন্য, তাদের সবার চক্রান্ত এখন জনসমক্ষে চলে এসেছে। বিজেপির প্রকৃত স্বরূপ সামনে চলে এসেছে। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল বলছেন, এখানে ধর্ষণ করা হয়নি। ইচ্ছা করে ২০০০ টাকা দিয়ে মহিলাদের সম্ভ্রম নষ্ট করা হয়েছে। গোটা দেশের কাছে ক’টা ভোটের জন্য বাংলার মানুষকে ছোট করেছে বিজেপি। বসিরহাটে বিজেপির যে প্রার্থী, সেই রেখা পাত্রের একটা ভিডিয়ো জনসমক্ষে এসেছে। সেখানে বলছেন, যারা অভিযোগ করেছেন, তাঁদের না নিয়ে যাদের নিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে এর যোগাযোগ নেই। বিজেপির যে প্রার্থী, যার সঙ্গে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন, গঙ্গাধর কয়াল জানিয়েছেন, সেই রেখা ২০০০ টাকা নিয়ে মিথ্যে মামলা করেছেন। বিজেপি যাদের রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে গিয়েছে, তাঁদের সাজিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আমি বলছি না। সন্দেশখালির ঘটনা সামনে আসার পর যেখানে পথসভা করে মায়েরা গর্জে উঠেছিলেন যে, সন্দেশখালির অপমান মানব না, সেই রাস্তায় বুধবার বিজেপির এক নেতা যে শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন, আপনারা দেখেছেন। যারা নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে যারা কথা বলেন, তাঁদের দেখুন।’
এর পাশাপাশি অভিষেক বলেন, ‘বিজেপি ২০০০ টাকা দিয়ে সন্দেশখালিতে কয়েক জন মহিলাকে দিয়েছে, তৃণমূলকে ছোট করবে বলে নয়, বাংলাকে ছোট করবে বলে করেছে। বাংলার ১০ কোটি মানুষকে অপমান করেছে। যারা বাংলাকে অপমান করছেন, তাঁদের ভোট নয়। যারা বঙ্গবাসীর অপমান করেন, তাঁদের কি ভোট দেবেন? তাঁদের কি উচিত শিক্ষা দেবেন? বাংলার মায়েদের সম্ভ্রম যারা বিক্রি করেছেন ২০০০ টাকায়, তাঁদের উচিত শিক্ষা দেবেন কি না! বিজেপিতে উচিত শিক্ষা দিতে ১৩ তারিখ রোদে পুড়ে হোক, বৃষ্টিতে ভিজে হোক জোড়াফুলে ভোট দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্তিশালী করুন। শতাব্দী রায়কে জয়ী করুন। এরা আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চায়। ৩ বছর আগে যে ভাবে তৃণমূলকে জিতিয়েছেন, আবার জয়ী করুন। প্রতারণার বিরুদ্ধে লড়াই করে বাংলার স্বার্থ দেখেছেন, তেমনই করুন। আবার ভোটে দিন। বিজেপির নেতারা অশালীন শব্দবন্ধ ব্যবহার করছেন। তিন মাস ধরে মমতাকে অপমান করতে গিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করেছে। রামপুরহাট বিধানসভা কেন্দ্রে জয়ের ব্যবধানে যাতে এক নম্বর হন, তা আপনারা সুনিশ্চিত করবেন।’