নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রথম থেকেই ঠিক হয়ে ছিল চলতি বছরের মে মাসে পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election) হবে। সেই মতো রাজ্য নির্বাচন কমিশন(West Bengal State Election Commission) থেকে শুরু করে সর্বস্তরে সেই নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরুও হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছিল এপ্রিল মাসের শেষ দিকে হয়তো নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হবে এবং মে মাসে ভোটগ্রহণ করা হবে। কিন্তু বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র(Mamata Banerjee) একটি মন্তব্যের পরে সেই নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়তো মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে না। তা হয়তো জুন মাসের শেষ দিকে হতে পারে। যদিও সরকারি ভাবে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু ঘোষণা করা হয়নি। তবে জুন মাসে উত্তরবঙ্গে বর্ষা(Monsoon) শুরু হয়ে যায়। ১০ জুন রাজ্যে বর্ষা আসার স্বাভাবিক দিনক্ষণ হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সেক্ষেত্রে বর্ষার মধ্যে ভোটগ্রহণ সম্ভব কিনা তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন থাকছে।
আরও পড়ুন ৫০ হাজার পঞ্চায়েত কর্মী স্বাস্থ্য বিমার আওতায়, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে তার আগে তাঁরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলে নেয়। দুই তরফের সন্মতির ভিত্তিতে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক হয় ও কমিশন তা ঘোষণা করে। কিন্তু গতকাল মুখ্যমন্ত্রী এক সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ২৫ এপ্রিল থেকে রাজ্যজুড়ে জনসংযোগ যাত্রা করবে তৃণমূল(TMC)। আগামী দু’মাস এই কর্মসূচি চলবে। সেই হিসাবে ২৫ জুনের আগে সম্ভবত পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে জুনের শেষদিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এবং সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ, চাওয়া-পাওয়ার কথা শুনতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে গ্রামমুখী জনসংযোগ যাত্রায় নামছে জোড়াফুল শিবির। সেই কর্মসূচীর সঙ্গেই থাকছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কে কেমন প্রার্থী দেখতে চান, তার মতামত জানানোর পর্বও।
আরও পড়ুন অমিত শাহকে ফোন করেছি প্রমাণ হলে ইস্তফা দেব, চ্যালেঞ্জ মুখ্যমন্ত্রীর
এই কর্মসূচি মমতার পরামর্শ নিয়ে নিজের মতো করে সাজিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জোড়াফুল সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। এদিনই অভিষেক আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচির কথা বিস্তারিত জানাবেন। তবে প্রচন্ড গরমের সময় সংযোগ যাত্রা কর্মসূচি করা যাবে কি না, তা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন মমতা। কিন্তু নিজেই বলেন, অভিষেক চায়, গরম থাকলেও সমস্তরকম সাবধানতা অবলম্বন করে কর্মসূচি হোক। তাই দলের কর্মীরা মানুষের কাছে যাবেন। কোথাও কোনও সমস্যা আছে কি না, তা শুনবেন। কোনও সমস্যা থাকলে তা পার্টির কাছে জানাবেন সাধারণ মানুষ। তারপর ওই সমস্ত সমস্যা বা অভিযোগ প্রশাসনিকভাবে সমাধান করা হবে। তূণমূল সূত্রে খবর, যিনি এলাকার মানুষের পাশে থাকতে পারবেন সবসময়, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, তাঁকেই প্রার্থী করতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। এই সংযোগ যাত্রায় এলাকার মানুষ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে জানাতে পারবেন, তাঁরা এলাকায় কাকে চাইছেন। ক্যাম্প বা শিবির গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় করা হবে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। অভিষেক নিজে বিভিন্ন এলাকায় যাবেন। এছাড়াও দলের একাধিক নেতা যাবেন গ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে। একইসঙ্গে এলাকার মানুষের কাছ থেকে দলের জনপ্রতিনিধিদের কাজকর্ম নিয়ে রিপোর্ট নিতে চাইছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর এই সব দেখেই মনে করা হচ্ছে এই কর্মসুচী শেষ হলে তারপরেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।