নিজস্ব প্রতিনিধি: গেরুয়া শিবিরের বিধায়ক কী ডুমুরের ফুল! বিধানসভা ভোটে জেতার পর কার্যত তাঁর টিকির দেখাও পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা। আর তাতেই বিধায়কের সন্ধান চেয়ে এলাকায় পড়েছে পোস্টার। সেই ঘটনা ঘিরেই শোরগোল পড়ে গেল বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীতে। শনিবার সকালে সোনামুখী বিধানসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু এলাকায় কেউ বা কারা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামির সন্ধান চেয়ে পোস্টার লাগিয়ে যান। সেই পোস্টারে লেখা আছে, ‘২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই সোনামুখীবিধানসভার বিধায়ক দিবাকর ঘরামি মহাশয় নিখোঁজ। সন্ধান পেলে সহৃদয় ব্যক্তিরা জানাবেন।’ তবে পোস্টারে এটাও লেখা আছে ওই পোস্টার দিয়েছেন ‘পাত্রসায়র ব্লকের সাধারণ মানুষ’। যদিও এই ঘটনাকে তৃণমূলের অপপ্রচার বলেই চিহ্নিত করেছেন বিধায়ক দিবাকর ঘরামি।
সোনামুখী বিধানসভা কেন্দ্রটি গঠিত হয়েছে সোনামুখী পুরসভা, সোনামুখী ব্লক এবং পাত্রসায়র ব্লকের বেতুল-রসুলপুর, বীরসিংহ, হামিরপুর, নারায়ণপুর ও পাত্রসায়র গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি নিয়ে। কিন্ত পাত্রসায়র ব্লকের ওই ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষের অভিযোগ, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দিবাকর ঘরামিকে আর ওইসব এলাকায় দেখতেই পাওয়া যায় না৷ তাই তাঁর সন্ধানে এলাকাবাসী ওই পোস্টার দিয়েছেন। যদিও দিবাকর ঘরামি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্টে তাঁর দাবি, ‘নিজেদের দলে টানতে না পেরেই আমার নামে কুৎসা রটাচ্ছে তৃণমূল৷ ওরা আমাকে দেখতে না পেলেও এলাকার মানুষ আমাকে ঠিকই দেখতে পান৷ সোনামুখী বিধানসভা এলাকায় মানুষ যে তৃণমূলের সঙ্গে নেই তার সব থেকে বড় প্রমাণ হচ্ছে, ২০১৬-র বিধানসভা থেকে এপর্যন্ত সব ভোটে সোনামুখী আর পাত্রসায়রে হেরেছে ওরা৷ বিজেপির সঙ্গে মানুষ ছিল, আছে আর থাকবেও৷ গোটা ঘটনাটাই শাসক দলের চক্রান্ত৷ বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে আমার পিছনে পড়ে রয়েছে ওরা৷ কী করে আমাকে তৃণমূলে যোগ করানো যায়৷ কিন্তু তাতে অসফল হয়েছে৷ আমি বিজেপির সঙ্গেই আছি৷ এখন তাই আমার নামে কুৎসা রটাচ্ছে।’
এদিকে দিবাকরের এই দাবি আবার খণ্ডন করেছেন পাত্রসায়রের ব্লক তৃণমূল সভাপতি দিলীপ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, ‘দিবাকরের এহেন দাবি শুনে হাসব না কাঁদব সেটাই ভাবছি। পোস্টারে সত্যি কথাই লেখা হয়েছে৷ ২রা মে-র পর থেকে বিজেপির জয়ী প্রার্থীকে এলাকায় দেখা যায়নি৷ এটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল৷ এরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন৷ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২১৩টি আসন দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে কোনও ফ্যাক্টর নয়৷ ২১৩-র পর এখন সংখ্যাটা ২২০-র কাছাকাছি৷ এর পর দিবাকর ঘরামির মত নেতাকে দলে নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস কোনও অংশেই জড়িত নয়।’