নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার দুয়ারে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট(Panchayat Election)। মার্চ-এপ্রিল মাসেই সেই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও কোনও কোনও মহল মনে করছে ফেব্রুয়ারি মাসেও সেই নির্বাচন হয়ে যেতে পারে। আর সেই আবহে ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work) প্রকল্পের জট না কাটলে যে বাংলার মানুষের কাছে বিন্দুমাত্র সাড়া পাবে না বিজেপি(BJP), সেটা তাঁরা বেশ ভালই বুঝতে পারছে। আর সেই সূত্রেই এবার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের জট কাটাতে চাইছে মোদি সরকার। নবান্নের(Nabanna) আধিকারিকদের ধারনা নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেন বলে তাঁরা আশাবাদী। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দারা যারা ১০০ দিনের কাজে জড়িত ছিলেন তাঁরা তাঁদের বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন।
১০০ দিনের কাজের প্রকল্প নিয়ে বঙ্গ বিজেপির তরফে কেন্দ্রীয় সরকারকে বেশ কিছু অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতেই কেন্দ্র সরকার একাধিকবার বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে সেই সব অভিযোগের সারবত্ত্বা খতিয়ে দেখতে। ওই সব প্রতিনিধিদল বাংলার নানা জেলায় এসে পরিদর্শন করার সময়ে কিছু কিছু ক্ষেত্রে গরমিল খুঁজেও পান। সেই প্রতিনিধিদলের রিপোর্টের ভিত্তিতেই গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে দেয় মোদি সরকার। তার জেরে গ্রামের গরিব মানুষেরা বঞ্চিত হন তাঁদের প্রাপ্য পাওনা থেকে। সেই টাকা যাতে কেন্দ্র দ্রুত বাংলার রাজ্য সরকারের হাতে তুইলে দেয় তার জন্য বার বার সরব হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। পাশাপাশি তদ্বির করেন রাজ্যের আধিকারিকেরাও। কেননা বকেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে যে তারা কোনওভাবেই প্রশ্রয় দিচ্ছে না, তা প্রমাণে তৎপর রাজ্য। তাই গ্রামোন্নয়নের কাজে যেকোনও অনিয়মের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে কড়া পদক্ষেপ।
নবান্ন সূত্রে খবর, সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে একটি ‘অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট’ পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে। সেখানে বিস্তারিতভাবে বলা হয়েছে রাজ্যের একাধিক পদক্ষেপের কথা। এই আবহে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ এবং রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের মধ্যে ফোনে কথা হয়। দু’জনের সাক্ষাৎ হতে পারে আগামী সপ্তাহেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে গত আড়াই মাস ধরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন প্রদীপবাবু। কখনও শারীরিক অসুস্থতার কথা বলে, কখনও আবার স্রেফ ব্যস্ততার কারণ দেখিয়ে সাক্ষাৎ এড়িয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শেষমেষ তিনি নিজেই রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে ফোন করে আগামী সপ্তাহে সাক্ষাতের কথা বলেন। দিন ও সময় তাঁর মন্ত্রক থেকে পরে জানিয়ে দেওয়া হবে। ওই বৈঠকে ১০০ দিনের কাজ সহ গ্রামোন্নয়নে বরাদ্দ নিয়েই আলোচনা হবে বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু। নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, বিজেপি চাপেই এতদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সময় দিচ্ছিলেন না। কিন্তু এখন বঙ্গ বিজেপির নেতারাই বুঝতে পেরেছেন ১০০ দিনের কাজের টাকা আমজনতা না পেলে কার্যত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ধাক্কা খাবে পদ্মশিবিরই। তাই এখন বঙ্গ বিজেপির তরফেই ১০০ দিনের কাজের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে মোদি সরকারকে। আর তার জেরেই মনে করা হচ্ছে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসেই রাজ্য তার বকেয়া টাকা হাতে পেয়ে যাবে।