নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার বিভিন্ন জায়গায় এলাকাভেদে রয়েছে বিভিন্ন লৌকিক সংস্কৃতির বৈচিত্র। মনসা পুজো থেকে চৈত্রের চড়ক— রূপসী বাংলার নিজস্ব পরিচয় গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে এমন লোকাচারগুলি। বৈশাখের বাংলায়ও বিভিন্ন এলাকায় নানা লোকাচার পালিত হয়। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটে ঐতিহ্য মেনে বৈশাখ মাসে লৌকিক চামুণ্ডা পুজো অনুষ্ঠিত হল। বালুরঘাটের চামুন্ডা তলায় প্রতি বছর আয়োজিত হয় এই লোকাচার। প্রথা মেনে এই বছরও বৈশাখ মাসের শেষ মঙ্গলবার ধুমধাম করে চামুণ্ডা মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হল।
এলাকায় চামুণ্ডা মায়ের আর একটি নাম প্রচলিত রয়েছে । স্থানীয়রা ‘দৌড়ানো কালি’ নামেও এই দেবীকে অভিহিত করেন। বালুরঘাট শহরের বটতলা চত্বরে বৈশাখের শেষ মঙ্গলবার চামুণ্ডা মায়ের পুজো দেন ভক্তরা। আর এই পুজো উপলক্ষে বসে মেলা। পুজো দেওয়ার পাশাপাশি সেই মেলায় ভিড় জমান মায়ের ভক্ত ও স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি, চামুণ্ডা মা এক ভক্তের মাথায় চেপে দৌড়ে ঘুরে বেড়ান, তাই ‘দৌড়ানো কালী’ নামেও লোকে মা’কে জানে। বালুরঘাটে চামুণ্ডা মা’কে পুজো দেওয়ার আগে একাধিক নিয়ম পালন করেন ভক্তরা। কথিত আছে বহু বছর আগে বানের জলে ভেসে এসেছিল চামুণ্ডা মায়ের মুখোশটি। বর্তমানে যে স্থানে মায়ের মন্দির, প্রথমে সেখানেই পড়ে থাকতে দেখা যায় চামুণ্ডা মায়ের মুখোশ। আর তার পর থেকেই সেই নির্দিষ্ট দিনে, নির্দিষ্ট স্থানে পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রথা মেনে তাই প্রবল ভক্তি ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মঙ্গলবার চামুণ্ডা মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হল। কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত দুবছর কোনওরকমে পুজো অনুষ্ঠিত হলেও বসেনি মেলা। কিন্তু করোনার প্রকোপ কমতেই এই বছর ভক্তরা মায়ের পুজো আয়োজন করলেন ভীষণ উদ্যমে। পাশাপাশি পুজো উপলক্ষে মেলায় ভিড়ও জমালেন ভক্ত ও স্থানীয়রা।