নিজস্ব প্রতিনিধি: খবরটা সত্যিই চমকে দেওয়ার মতো। কিন্তু প্রকৃতি যে খেল দেখাচ্ছে তাতে করে আর অসম্ভব বলে কিছুই নেই। তাই এবছর পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে যদি বরফ পড়তে দেখা যায় তাহলে কিন্তু অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবে না। বরঞ্চ ষোল আনাই এই সম্ভবনা রয়েছে। অন্তত এমনটাই দাবি করেছেন ভূতত্ত্ববিদ সুজীব কর। রাজ্যের প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এমনটাই দায়ী করেছেন। গল্প এখানেই শেষ নয়, তিনি এটাও দাবি করেছেন, যে হারে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই হিমায়নের সূচনা হবে। আর তার হাত ধরেই ২০-৩০ বছরের মধ্যেই শীতকালে কলকাতাতেও বরফ পড়বে। স্বাভাবিক ভাবেই সুজীববাবুর এই দাবি ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যের আবহাওয়া দফতরের পাশাপাশি রাজ্যের আবহাওয়াবিদদের মধ্যেও।
শীতকালে রাঢ় বাংলার জেলাগুলিতে পারা ১০ ডিগ্রির অনেক নীচেই নেমে যায়। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পানাগড়ের মতো এলাকাগুলিতে ৫ ডিগ্রির আশেপাশে তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সুজীববাবুর দাবি, ‘চরম উষ্ণায়নের মধ্যে দিয়েই হিমায়নের সূচনা হয়। ক্লাইমেটিক সিস্টেম ধীরে ধীরে ক্লোজ সিস্টেমের দিকে এগোচ্ছে। অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনের যে পদ্ধতি দীর্ঘদিন ধরেই চলছিল, তা শেষ হতে চলেছে কিছুদিনের মধ্যেই। এতে বাস্তুতন্ত্রই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১৩০ কোটি বছর আগেও তেমনটাই হয়েছিল। ভবিষ্যতেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। ‘এ বছর দার্জিলিং এবং সান্দাকফুতে তুষারপাত বেড়েছে। শুধু ওই এলাকা নয়, এবার মধ্য ভারতের বেশ কিছু জায়গাতেও তুষারপাত হয়েছে। ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশের মতো বেশ কিছু জায়গাতেও বরফ পড়েছে। এসব অঞ্চলে আগে কখনও তুষারপাত হয়নি। পরবর্তী সময়ে আরও বেশ কিছু জায়গায় তুষারপাত ঘটবে।’
এই প্রসঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, ‘১৩০ কোটি বছর আগে ভারতবর্ষ বরফের চাদরে ঢাকা ছিল। শুধুমাত্র তামিলনাড়ু বাদে বাকি সমস্ত এলাকাই বরফে ঢাকা ছিল। সুতরাং অতীতে কলকাতা সহ বাংলাতেও তুষারপাতের নজির ছিল। এখন খুব দ্রুত গতিতে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। এক্ষেত্রে শীতকালে তাপমাত্রা অনেকটা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই হিসাবে এবছর পুরুলিয়াতেও তুষারপাত হতে পারে। আর আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যেই কলকাতায় বরফ পড়বে। তবে বাংলার নীচেই বঙ্গোপসাগর থাকায় কিছুটা বাঁচোয়া। কারণ, সমুদ্র তাপমাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। আবহাওয়াকে উষ্ণ করে। কিন্তু, এই মুহূর্তে যে হারে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই হিমায়নের সূচনা হবে।’